ব্রাজিলের ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর ক্ষমতার শেষ মাস গেল ডিসেম্বরে আমাজনে রেকর্ড পরিমাণ বন উজাড় হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তা ছিল প্রায় দেড় শ শতাংশ বেশি। ব্রাজিলের একটি সরকারি প্রতিবেদনে এ চিত্র বেরিয়ে এসেছে।
স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে ডিসেম্বর মাসে আমাজন বনের ২১৮ বর্গকিলোমিটার বন ধ্বংস করা হয়েছে। ব্রাজিলের জাতীয় মহাকাশ সংস্থার (ইনপে) পর্যবেক্ষণে এই চিত্র ধরা পড়েছে।
ইনপের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে জানা গেছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আমাজনে ৮৭ বর্গকিলোমিটার বন উজাড় হয়। সেই তুলনায় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে দেড় শ শতাংশের বেশি বন উজাড় হয়েছে।
বলসোনারোর মেয়াদ শেষ হওয়ায় ডিসেম্বরে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এতে বামপন্থী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী লুলা দা সিলভার কাছে পরাজিত হন তিনি। বলসোনারো ক্ষমতায় থাকাকালে আমাজনে বিপুল পরিমাণ বন উজাড়ের ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সোচ্চার ছিল। বলা হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুসখ্যাত আমাজন বন ধ্বংস করে জলবায়ুর ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে।
বলসোনারোর চার বছরের শাসনামলে আগের দশকের তুলনায় প্রতিবছর গড়ে আমাজনের ৭৫ শতাংশ বেশি বন উজাড় হয়েছে। এর পেছনে বলসোনারোর অ্যাগ্রিবিজনেস মহলের বন্ধুরা জড়িত ছিলেন।
পরিবেশবাদী সংগঠন ও জলবায়ু পর্যবেক্ষক মার্সিও আস্তিরিনি বলেন, বলসোনারো সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু তিনি পরিবেশের যে ক্ষতি করে গেছেন তার রেশ অনেক বছর পর্যন্ত টানতে হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাষাবাদ ও খামার করার জন্য বড় বড় ফার্ম কোম্পানি ও ভূমিদস্যুরা বন উজাড়ের জন্য দায়ী। আর এ কাজে তাদের সহযোগিতা করেছেন বনসোনারো। তবে ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সময় বন উজাড়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে এনেছিলেন লুলা। ব্রাজিলের পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রম আরও জোরদার করে বন উজাড়ের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি।