পেরু ছাড়া লাতিন অঞ্চলের সার্বভৌম ১২টি দেশের সব প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় প্রায় এক দশকের মধ্যে কোনো শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে জড়ো হচ্ছেন লাতিন আমেরিকার নেতারা। ব্রাজিলের বামপন্থী নেতা লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভার আমন্ত্রণে গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের এ সম্মেলনে যোগদানের কথা রয়েছে। লুলা ওই অঞ্চলে দেশটির পুনরায় সক্রিয় ভূমিকা পালনের বিষয়টি নিশ্চিতের চেষ্টা করছেন।
লাতিন অঞ্চলের বামপন্থী প্রেসিডেন্টরা ২০০৮ সালে ইউনিয়ন অব সাউথ আমেরিকান নেশনস (উনাসুর) নামের এই আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু পরবর্তীকালে কয়েকটি দেশে ডানপন্থী সরকার ক্ষমতায় এলে মতাদর্শিক বিভক্তির কারণে এর কার্যক্রম বেশি দূর এগোয়নি। এ নিয়ে তখন অঞ্চলটিতে কূটনৈতিক টানাপোড়েনও সৃষ্টি হয়।
পেরু ছাড়া লাতিন অঞ্চলের সার্বভৌম ১২টি দেশের সব প্রেসিডেন্টকে এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এতে তাঁরা জলবায়ু পরিবর্তন ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় সমন্বিত পন্থা নিয়ে আলোচনা করবেন। লাতিন অঞ্চলে বর্তমানে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বাড়ছে।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে লুলা বলেন, ‘আগামীকালের (মঙ্গলবার) সম্মেলনে আলোচনার বিষয়ে আমরা কোনো কিছুই ঠিক করিনি। এখানে কেবলই সম্ভাবনাগুলো নিয়ে আলাপ করা হবে।’
এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। আট বছরের মধ্যে এই প্রথম ব্রাজিল সফরে গেলেন তিনি।
লুলা দা সিলভা বলেন, নেতাদের উনাসুরকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে না। বরং আলাদা ধরনের একটি সংগঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘মূল ধারণাটি হলো অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও পরিবেশগত বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আমাদের একটি জোট দরকার। আমাদের একে অপরের সঙ্গে কথা বলা শিখতে হবে।’
মাদুরো আশা করছেন, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানাতে ঐক্যবদ্ধ হবে। বিষয়টি তিনি ও লুলা তাঁদের সংবাদ সম্মেলনে জোরালোভাবে তুলে ধরেন।
লুলা চলতি বছর ক্ষমতায় আসার পর ব্রাসিলিয়া ও কারাকাসের মধ্যে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করেন। এর আগে উগ্র-ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো ক্ষমতায় এসে কারাকাসের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেন এবং মাদুরোর ব্রাজিলে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন।
সম্মেলন আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্রাজিলের কর্মকর্তারা বলেছেন, পারস্পরিক সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করে এমন রাজনৈতিক বিভক্তি সম্মেলনে এড়িয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁরা বলেন, ‘দেশগুলোর মধ্যে আদর্শগত পার্থক্য রয়েছে, এ বিষয়ে আমরা সচেতন। তবে লুলা দেশগুলোর অভিন্ন বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে আঞ্চলিক সংলাপ পুনরায় সক্রিয় করতে চান।’