কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সংকট। ভয়াবহ খরায় এ অঞ্চলের একটি জলাধারের পানি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে নিচের স্তরে নেমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় এক কোটি জনসংখ্যার রাজধানী শহরে পানি ব্যবহার সীমিত করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বোগোটা ও এর আশপাশের এলাকাগুলোকে নয়টি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি অঞ্চলে ধারাবাহিকভাবে ২৪ ঘণ্টা করে পানি সরবরাহ সেবা বন্ধ রাখা হবে। তবে হাসপাতাল ও স্কুলগুলো এ পদক্ষেপের বাইরে থাকবে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে।
পানির এই সংকটে ‘ভয়ানক পরিস্থিতি’ দেখা দিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বোগোটার মেয়র কার্লোস ফার্নান্দো গালান। তিনি বলেছেন, ‘এই সময়ে বোগোটায় আমরা এক ফোঁটা পানিও নষ্ট না করি। এর ফলে পানি নিয়ে যে বিধিনিষেধ চলছে, তা দ্রুত তুলে নেওয়া বা কমানো যাবে।’
তীব্র গরম ও বৃষ্টির অভাবে কলম্বিয়ার জলাধারগুলোর পানি আশঙ্কাজনক হারে কমছে। বোগোটা শহরের প্রায় ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ করা হয় চুজা জলাধার থেকে। সেটিতেও ধারণক্ষমতার ১৭ শতাংশের কম পানি রয়েছে। মেয়র কার্লোস ফার্নান্দো গালানের ভাষ্যমতে, গত ৪০ বছরের মধ্যে জলাধারটিতে এত কম পানি কখনোই ছিল না।
কলম্বিয়ায় পানির সংকট নিয়ে এক্সে পোস্ট করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। তাতে তিনি বলেছেন, আগামী ৩০ বছর কলম্বিয়ার পানিসম্পদ রক্ষায় ‘উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন’ আনার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বোগোটার বাসিন্দারাও পানির ব্যবহার কমিয়েছেন। শহরটির বাসিন্দা ক্লারা একসোবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘(পানিসংকটের কারণে) কিছু কাজ আমরা আর করছি না। যেমন—গাড়ি ধোয়া।’ আইজ্যাক সান্দোভাল নামের আরেকজন বলেছেন, ‘গোসল করতে আমি সর্বোচ্চ চার মিনিট সময় নিচ্ছি। আর কাপড় ধুচ্ছি না।’
এদিকে উরুগুয়ের রাজধানী মোন্তেভিদেও ও মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটিতেও কয়েক বছর ধরে পানির সংকট চলছে। এসব অঞ্চলে খরার প্রধান একটি কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনকে। এ ছাড়া দ্রুত নগরায়ণ ও দুর্বল অবকাঠামোকেও পরিবেশগত এ দুর্যোগের জন্য দায়ী করা হচ্ছে।