ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো মনে করেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ও আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের মধ্য দিয়ে এখনো দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার সুযোগ আছে। গতকাল মঙ্গলবার এ কথা বলেন তিনি।
গত ২৮ জুলাই ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং এ নিয়ে চলমান বিতর্কের এক মাস পূর্ণ হয়েছে। এরই মধ্যে বিরোধী দলের ক্ষমতা দাবি করার পথগুলোও ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে আসছে।
ভেনেজুয়েলার জাতীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এবং তাদের শীর্ষ আদালত মাদুরোকে নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেন। তাঁরা বলেছেন, নির্বাচনে ৫০ শতাংশের চেয়ে সামান্য বেশি ভোট পেয়েছেন তিনি।
তবে বিরোধী দল তাদের ওয়েবসাইটে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোটের হিসাব প্রকাশ করেছে। সে হিসাব অনুসারে বিরোধীদলীয় প্রার্থী গঞ্জালেজ ৬৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
ভেনেজুয়েলার নির্বাচন পরিষদ এখনো ভোটের ফলাফল বিস্তারিত আকারে প্রকাশ করেনি। তারা বলছে, নির্বাচনের দিন তাদের প্রযুক্তি ব্যবস্থাগুলোর ওপর সাইবার হামলা হয়েছে।
নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে ভেনেজুয়েলায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ২৭ জন নিহত এবং ২ হাজার ৪০০ জন গ্রেপ্তার হয়। ভোটের পুঙ্খানুপুঙ্খ ফল প্রকাশের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও দাবি জানিয়েছে। ইতিমধ্যে ভেনেজুয়েলার সরকারি কৌঁসুলি বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছেন। সাংবাদিকদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাচাদো বলেন, বিজয় দাবি করার জন্য বিরোধী দল ‘দৃঢ় কৌশল’ অবলম্বন করছে। তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত উল্লেখ করেননি। তবে বলেছেন, তিনি এবং সাবেক বিরোধীদলীয় প্রার্থী এডমান্ডো গঞ্জালেজ ঐক্যবদ্ধ আছেন।
নির্বাচনের পর থেকে মাচাদোকে বিভিন্ন বিক্ষোভে দেখা গেলেও মূলত তিনি গা ঢাকা দিয়ে আছেন। রয়টার্সকে ভিডিও কলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাচাদো বলেন, ‘এটা অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত শক্তির মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়, যা পরিবর্তন আনবে। মাদুরোর কাছে আজ কী আছে? অল্পসংখ্যক উচ্চপর্যায়ের সেনা, ম্যাজিস্ট্রেটদের ((শীর্ষ আদালত) নিয়ন্ত্রণ এবং অস্ত্র...তিনি আতঙ্ক তৈরি করছেন।’
বিক্ষোভে সহিংসতার ঘটনায় মাচাদো ও গঞ্জালেজকে দায়ী করে থাকেন মাদুরো। এর জন্য তাঁদের কারাবন্দী করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে মাচাদোকে জিজ্ঞাসা করা হয়, সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে মাদুরো ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘না, কোনোভাবেই না।’
রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলার কয়েক ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে মাচাদো বলেন, আইনজীবী পারকিন্স রোচাকে অপহরণ করেছেন নিকোলা মাদুরো।
রোচা হলেন মাচাদোর ভেন্তে ভেনেজুয়েলা আন্দোলনের আইনজীবী এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে মাচাদো লিখেছেন, পারকিন্স রোচা, কারাবন্দী ও নিপীড়িত মানুষ এবং ভেনেজুয়েলার সবার পক্ষে তাদের লড়াই চলবে।