ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী এডমান্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়াকে বিজয়ী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া দেশের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর বিজয়ী হওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ।
গত ২৮ জুলাই ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর পরই দেশজুড়ে উৎকণ্ঠা জেঁকে বসে। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে রাজধানী কারাকাসসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মাদুরো ও তাঁর বিরোধীরা নিজ নিজ সমর্থকদের এ সপ্তাহের শেষে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান।
বিরোধী প্রার্থী গঞ্জালেজ উরুতিয়াকে গতকাল শুক্রবার ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে আর্জেন্টিনা, কোস্টারিকা, ইকুয়েডর, পানামা ও উরুগুয়ে। জাতীয় নির্বাচন পরিষদের দেওয়া ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে এই তালিকায় যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও পেরু।
তবে ৫২ শতাংশ ভোট পাওয়ার কথা জানিয়ে মাদুরোর জয়কে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছে ভেনেজুয়েলার নির্বাচন নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সংস্থাটি জানায়, গঞ্জালেজ উরুতিয়া ৪৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
এদিকে ৬১ বছর বয়সী মাদুরো তাঁর জয় নিয়ে হওয়া সমালোচনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিরোধী নেতা মারিয়া কারিনা মাচাদো ও গঞ্জালেজ উরুতিয়াকে হুমকি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘তাঁদের কারাগারে ভরা উচিত।’ ২০১৩ সাল থেকে ভেনেজুয়েলার ক্ষমতায় আছেন মাদুরো।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের পর এ–সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালকে বিষয়টি তদন্ত ও ফলাফল যাচাইয়ের অনুরোধ জানান মাদুরো। জনসাধারণের সামনে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভোট গণনার তথ্য তুলে ধরার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হয়। এ সময় অন্য বিরোধী প্রার্থীরা সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত হলেও গঞ্জালেজকে দেখা যায়নি।
গত বৃহস্পতিবার নিকোলা মাদুরোর জয় প্রত্যাখ্যান করে গঞ্জালেজ উরুতিয়াকে বিজয়ী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেন, পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে ভেনেজুয়েলার জনগণের কাছে এটি স্পষ্ট, এডমান্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়া সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে ২৮ জুলাইয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন।
ভেনেজুয়েলায় বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ চলছে। এ পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা মাচাদো। হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মাচাদো বলেন, ‘২৮ জুলাইয়ের ঐতিহাসিক বিজয়ের গৌরব নিয়ে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ, সংগঠিত ও সচল থাকতে হবে।’ ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে মাচাদো লিখেছেন, তিনি এখন আত্মগোপনে আছেন এবং নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কা বোধ করছেন।