শিশু ধর্ষণকারীদের সাজা হিসেবে রাসায়নিক খোজাকরণের একটি আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে পেরু সরকার। আজ বৃহস্পতিবার এনডিটিভি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
পেরুর সরকার প্রস্তাবিত বিলটি কংগ্রেসে পেশ করবে। গতকাল বুধবার দেশটির মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
সম্প্রতি পেরুতে তিন বছর বয়সী এক কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় পেরুজুড়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিশু ধর্ষণকারীদের রাসায়নিক খোজাকরণের আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা নেয় পেরু সরকার।
দেশটির বিচারমন্ত্রী ফেলিক্স চেরো বলেন, ‘ধর্ষণকারীদের জন্য একটি অতিরিক্ত সাজা হিসেবে রাসায়নিক খোজাকরণের বিষয়টি আমরা বিবেচনা করছি।’
সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে ফেলিক্স চেরো বলেন, শিশু ধর্ষণকারীরা সাজা হিসেবে কারাদণ্ড ভোগ করবে। কারাদণ্ডের সাজাভোগ শেষে ধর্ষণকারীদের রাসায়নিকভাবে খোজা করে দেওয়া হবে।
পেরুতে তিন বছর বয়সী একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে চলতি মাসের শুরুর দিকে ৪৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্ষণের শিকার শিশুটির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তার অস্ত্রোপচার করতে হয়।
দেশটির সামাজিক রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলো শিশু ধর্ষণকারীদের রাসায়নিক খোজাকরণের বিলটি সমর্থন করছেন। সাবেক এই স্কুলশিক্ষক বলেছেন, যাঁরা শিশুদের ধর্ষণ করেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক কায়দায় শাস্তি দেওয়া দরকার।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে কাস্টিলো বলেছিলেন, ‘আমরা আশা করি, কংগ্রেসে বিলটি সমর্থন পাবে।’
আইনে পরিণত হতে হলে বিলটি পেরুর কংগ্রেসে পাস হতে হবে।
পেরুর রক্ষণশীল সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতাদের মধ্যে কেউ কেউ শিশুকন্যা ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত করার বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন।
এদিকে রাসায়নিক খোজাকরণের প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন পেরুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জর্জ লোপেজ। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীর মা-বাবাসহ নারী অধিকার সংস্থাগুলোও এ প্রস্তাবের সমালোচনা করেছে।
দেশটির নারী অধিকার গোষ্ঠী ফ্লোরা ট্রিস্টান এক টুইটে বলেছে, ‘আমরা দুঃখিত, দেশের শাসনকার্য পরিচালনাকারী ব্যক্তিরা যৌন সহিংসতা বোঝেন না। আমাদের যা দরকার, তা হলো বিচারপ্রক্রিয়ার গতি বাড়ানো, সেবার উন্নতি, দায়মুক্তির বিরুদ্ধে লড়াই ও প্রতিরোধ জোরদার করা।’
রাসায়নিক খোজাকরণের সাজা প্রবর্তন নিয়ে আগেও পেরুর রাজনীতিবিদদের আলোচনা করতে দেখা গেছে। কিন্তু তা আলোর মুখে দেখেনি।