ব্রাজিলে লোহার আকরিক আহরণের খনিতে বাঁধ ধসে কমপক্ষে সাতজন মারা গেছে। দেড় শ মানুষ নিখোঁজ। চাপা পড়েছে বহু বাড়ি-গাড়ি। গতকাল শুক্রবার ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বে মিনাস জেরাইস অঙ্গরাজ্যে ব্রুমাদিনহো এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, বাঁধ ধসে স্রোতের মতো ভেসে আসা কাদাজল ছড়িয়ে পড়েছে ব্রুমাদিনহোর গ্রামাঞ্চলে। আটকে পড়া লোকজনকে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করছে জরুরি উদ্ধারকারী দল।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে অনেক শ্রমিক রয়েছেন। তাঁরা বাঁধের ক্যাফেটেরিয়ায় দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। তাঁরা মাটিচাপা পড়েন।
তিন বছর আগে মিনাস জেরাইসের আরেক শহরে একই ভাবে বাঁধধসের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময় ১৯ জনের প্রাণহানি ঘটে।
ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় খনি প্রতিষ্ঠান ভ্যালের মালিকানাধীন এই বাঁধ এবার কেন ধসে পড়ল, এর সুস্পষ্ট কারণ জানা যায়নি। বাঁধটি ১৯৭৬ সালে তৈরি হয়। এটা ওই এলাকায় আরও কয়েকটি বাঁধের একটি। খনি থেকে আহৃত ধাতুর তলানি রাখা হতো ওই বাঁধে।
ভ্যালের দেওয়া তথ্য অনুসারে, বাঁধটির ধারণ ক্ষমতা ১২ মিলিয়ন ঘনমিটার। তবে তিন বছর ধরে বাঁধটি অকার্যকর অবস্থায় ছিল।
বাঁধ ভেঙে কী পরিমাণ বর্জ্য নির্গত হয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি।
বাঁধ ভেঙে বেরিয়ে আসা বর্জ্য ব্রুমাদিনহোর পাশে ভিলা ফরটেসোতে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল গ্লোবোনিউজকে ব্রুমাদিনহোর মেয়র আভিমার দ্য মেলো বলেছেন, ঘটনাটি এত আকস্মিক ছিল যে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এখন মূল কাজ হচ্ছে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা।
ইতিমধ্যে উদ্ধার তৎপরতায় রয়েছেন ১০০ উদ্ধারকারী। আজ আরও ১০০ জন এ কাজে যোগ দেবেন।
টুইটারে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারো এটাকে ‘গুরুতর মর্মান্তিক’ ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে পারেন।
পরিবেশ, খনিজ ও জ্বালানি এবং আঞ্চলিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন।
দুর্ঘটনার সময় সেখানে ভ্যালের ৩০০ কর্মী ছিলেন।
ভ্যালের প্রধান নির্বাহী ফাবিও শোর্য়াজম্যান এ ঘটনাকে মর্মান্তিক উল্লেখ করে বলেছেন, বাঁধের অবস্থা পর্যবেক্ষণে একটি জার্মান প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। গত সেপ্টেম্বরে তাদের দেওয়া প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাঁধের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।