ব্রাজিলে বর্ণবাদ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি দেশটিতে দুই শ্বেতাঙ্গ নিরাপত্তারক্ষীর হাতে এক কৃষ্ণাজ্ঞ নিহত হওয়ার ঘটনাটি ‘কাঠামোগত বর্ণবাদের’ দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। এ ঘটনায় স্বাধীন তদন্ত ও দ্রুত দেশটিতে সংস্কার আনার আহ্বান জানানো হয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ব্রাজিলে কয়েক দিন ধরেই বর্ণবাদবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ হচ্ছে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের পোর্তো অ্যালিগ্রিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে দুই শ্বেতাঙ্গ নিরাপত্তারক্ষীর হাতে মারধরের শিকার হন ৪০ বছর বয়সী জোয়াও অ্যালবার্টো সিলভেইরা ফ্রেইটাস (৪০)। ওই ঘটনার ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, পোর্তো অ্যালেগ্রিতে ক্যারফুর স্টোরের নিরাপত্তারক্ষীরা জোয়াওর মুখে একাধিকবার ঘুষি মারেন। এরপর মারা যান তিনি। ওই দুজন নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়েছে।
দেশটির দক্ষিণের শহর পোর্তো অ্যালিগ্রিতে বৃহস্পতিবার রাতের ওই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ স্থানীয় গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিক্ষোভ শুরু হয়।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, পেশায় ঢালাইকর (ওয়েল্ডার) সিলভেইরাকে এক নিরাপত্তারক্ষী ধরে রেখেছেন। আরেক নিরাপত্তাকর্মী তাঁর মুখ ও মাথায় ঘুষি মারছেন। এ সময় ওই সুপারমার্কেটের একজন কর্মী তা মোবাইলে ভিডিও করছেন।
জাতিসংঘের অধিকারবিষয়ক অফিসের মুখপাত্র রাভিনা সামদাসানি বলেন, ব্রাজিলে কৃষ্ণাঙ্গরা কীভাবে সহিংসতার শিকার হন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি তারই চরম ও খুবই দুঃখজনক উদাহরণ।
তিনি আরও বলেন, দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের অন্তর্নিহিত সমস্যাটি ও বর্ণবাদের বিষয়টি অনুধাবন করা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো দেশটিতে কাঠামোগত বর্ণবৈষম্যের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। দেশটির ২১ কোটি ২০ লাখ মানুষের মধ্যে ৫৫ শতাংশ কৃষ্ণাজ্ঞ বা মিশ্র জাতিসত্তার। বলসোনারো নিজেকে ‘বর্ণান্ধ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
সামদাসানি অবশ্য জোর দিয়েছিলেন যে ব্রাজিলের আফ্রিকান বংশোদ্ভূতদের ক্ষেত্রে কাঠামোগত বর্ণবাদ, বৈষম্য এবং সহিংসতার বিষয়টি তথ্য দ্বারা নথিভুক্ত করা হয়েছে।