লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট হিসেবে গতকাল বুধবার শপথ নিয়েছেন পেদ্রো কাস্তিলিও। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
উত্তেজনাপূর্ণ দীর্ঘ নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষে বিজয়ী প্রার্থী পেদ্রো অবশেষে পেরুর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিলেন। শপথ নেওয়ার পর তিনি পেরুর জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেন।
অভিষেক ভাষণে পেদ্রো বলেন, পেরুতে এখনো ঔপনিবেশিক ক্ষত গভীরভাবে রয়ে গেছে। তিনি এই ক্ষত সারিয়ে তুলতে চান। পেরুতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেছেন পেদ্রো।
পেদ্রো এমন এক দিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিলেন, যেদিন স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণার ২০০তম বার্ষিকী পালন করছে পেরু।
পেদ্রো বলেন, ঔপনিবেশিক আমলে তাঁদের পূর্বসূরিদের শোষণ করা হয়েছে। ঔপনিবেশিক যুগে পেরুতে শ্রেণি ও বর্ণের ভেদাভেদ তৈরি করা হয়েছে। সেই ভেদাভেদ এখনো গভীরভাবে পেরুতে রয়ে গেছে। এই ভেদাভেদ, এই ক্ষত সারিয়ে তোলার কথা বলেন তিনি।
৫১ বছর বয়সী পেদ্রো একজন দরিদ্র কৃষকের সন্তান। পেরুর গ্রামীণ দরিদ্র ভোটারদের সমর্থনেই তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘এই প্রথম এ দেশ (পেরু) একজন কৃষক দ্বারা পরিচালিত হবে।’
বামপন্থী পেদ্রো স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। সেখান থেকে তিনি প্রেসিডেন্ট হলেন। তাঁর বিজয় দেশটির রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক এলিটদের বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে।
গত ৬ জুন পেরুতে দ্বিতীয় দফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে পেদ্রোর প্রতিপক্ষ ছিলেন ডানপন্থী কিকো ফুজিমোরি। নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। তাই অভিযোগ পর্যালোচনা শেষে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে প্রায় দেড় মাস সময় লেগে যায়।
নির্বাচনে পেদ্রো ৫০ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পান। কিকো পান ৪৯ শতাংশের কিছু বেশি ভোট। কিকোকে ৪৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন পেদ্রো।
পেদ্রো নির্বাচনী প্রচারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে পেরুর খনি ও হাইড্রোকার্বন খাত জাতীয়করণ কর করার কথা বলেছিলেন। নির্বাচনে জয়ী হলে এক বছরে এক লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন বলে বলেছিলেন তিনি। এ ছাড়া অপরাধ মোকাবিলায় পেরুতে পুনরায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করার পক্ষে তিনি।