চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোয় বিক্ষোভ চলাকালে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছে। গতকাল রোববার একদল লুটেরা এই আগুন লাগায়। বিবিসি অনলাইন ও বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে দেশটিতে। বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন জায়গায় লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। গতকাল বেশ কয়েকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন অঞ্চলে দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সান্তিয়াগো, ভালপাড়াসো, কোকিম্বো ওয়াই বায়োবাও অঞ্চলে গত শনিবার রাত থেকেই কারফিউ আরোপ করা হয়েছিল। পুলিশ বলেছে, পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দমাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও জলকামান ব্যবহার করে।
লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে ধনী দেশ চিলিতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে অনেক দিন ধরেই অসন্তোষ বাড়ছে। বিশেষ করে ৭০ লাখ বাসিন্দার শহর সান্তিয়াগোয় সম্প্রতি জীবনযাত্রার ব্যয় খুব বেড়ে গেছে। এর মধ্যেই ৬ অক্টোবর সরকার মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। মেট্রোরেলের ভাড়া ৮০০ পেসো থেকে বাড়িয়ে ৮৩১ পেসো করা হয়।
এ ঘোষণায় যেন ফুঁসে ওঠে পুরো সান্তিয়াগো। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে চিলির বিভিন্ন এলাকায়। গত শনিবার রাতে সান্তিয়াগোর একটি বিপণিবিতানে অগ্নিকাণ্ডে তিনজন নিহত হন। এর মধ্যে তৈরি পোশাক কারখানায় আগুন লেগে পাঁচজন নিহত হলো।
সরকারের প্রতিক্রিয়াকে সমর্থন করেছেন চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা। কর্মকর্তাদের নিয়ে ডাকা জরুরি এক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে গণতন্ত্রের কেবল অধিকারই নয়, সেই সঙ্গে গণতন্ত্র যে ধ্বংস করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য নিজের যা সরঞ্জাম রয়েছে এবং আইনের শাসন ব্যবহার করে নিজেকে রক্ষা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
পরিস্থিতি সামাল দিতে গত শুক্রবার পাঁচটি অঞ্চলে সরকার জরুরি অবস্থা জারি করলেও ঘরে ফেরেনি বিক্ষোভকারীরা। জনগণের চলাফেরার স্বাধীনতা এবং তাদের সমাবেশের অধিকারকে সীমাবদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। হাজার হাজার সৈন্য এবং ট্যাংক রাজধানীসহ অন্যান্য শহরে মোতায়েন করা হয়েছে। ১৯৯০ সালের পর এই প্রথম এমনটা দেখা যাচ্ছে চিলিতে। ১৯৯০ সালের অগাস্টো পিনোশেটের একনায়কতন্ত্রের পর চিলিতে গণতন্ত্র ফিরে আসে।