বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি পূরণের ঐতিহাসিক তহবিল গঠনে সম্মতি।
লোহিত সাগরের ওপর ভোরের আলো ছাপ ফেলেছে। মিসরীয় আয়োজকেরা গত শনিবার জলবায়ু সম্মেলনে একটি আপস চুক্তির খসড়া উপস্থাপন করল। সারা রাত ধরে শার্ম আল-শেখে আলোচনার পর জাতিসংঘের বিধান অনুযায়ী ঐকমত্য পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে চুক্তিতে উপনীত হওয়ায় সভাপতির হাতুড়ির শব্দ ধ্বনিত হলো।
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি পূরণের ঐতিহাসিক তহবিল গঠনে সম্মত হয়েছে। অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়ন তহবিল জলবায়ু বিপর্যয়ের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশসমূহকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে রাজি হয়েছে। আগামী কপে কাঠামো উপস্থাপন করা হবে। সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট হলেও জলবায়ু সংকটের বিশাল বৈষম্য বিদ্যমান থেকে গেল। অনেক অঙ্গীকার কথামালায় রয়ে যাচ্ছে।
শার্ম আল-শেখ অর্থাৎ ‘জ্ঞানীদের উপসাগরে’ দুই সপ্তাহব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন শুক্রবার রাতের সময়সীমার ৩৬ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলেছিল। পক্ষকালের অধিক দর–কষাকষিতে ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে বড় বিভাজন ছিল। অনেক সময় চুক্তিতে পৌঁছানো অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল। শেষ ঘণ্টাগুলোতে দেশসমূহ একটি শব্দ নিয়েও ঝগড়া করেছিল। বিশ্বের তাপমাত্রা এই শতাব্দীর মধ্যে যাতে আরও দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস না বাড়ে, অর্থায়ন, অভিযোজন তহবিল, অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি তহবিল, বিশ্বব্যাংক সংস্কার ও আফ্রিকার গ্যাস উত্তোলন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
চুক্তিটি নিখুঁত থেকে অনেক দূরে। বেশ কয়েকটি মূল উপাদান ত্রুটিযুক্ত এবং প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অভাব লক্ষণীয়। গত বছর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ–২৬ সম্মেলনে সম্মত তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত করার প্রতিশ্রুতিতে কোনো অগ্রগতিবিষয়ক জাতীয় পরিকল্পনার উপস্থাপন দেখা যায়নি। ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য দেশসমূহ এযাবৎ যে জাতীয় পরিকল্পনা পেশ করেছে, তা বৈজ্ঞানিক পরামর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক্-শিল্প স্তরের ওপরে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়। জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করার ভাষা দুর্বল।
অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়ন তহবিল গঠন ও অভিযোজনের তহবিলসংকট
প্রত্যাশিত কারণেই কপ-২৭-এ দরিদ্র দেশগুলোর জন্য জলবায়ু ক্ষতিপূরণ তহবিলের বিষয়ে আলোচনা প্রাধান্য পেয়েছে। উন্নত দেশগুলোর জন্যই বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়েছে। নিজেদের সমৃদ্ধ করতে লাগামহীন জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করেছে ও করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি জলবায়ু সংকটের বিধ্বংসী প্রভাবকে বোঝায়। এগুলো এমন ক্ষয়ক্ষতি, যা অভিযোজন প্রক্রিয়ায় তথা বর্তমান ও ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিরসন করা সম্ভব নয়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশ ভানুয়াতু ১৯৯১ সালে প্রথমে এ ধরনের আর্থিক তহবিল গঠনের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু বিষয়টি বছরের পর বছর তথাকথিত টেকনিক্যাল আলোচনায় আবদ্ধ করে রাখা হয়। অবশেষে অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি ও এর অর্থায়নের বিষয়টি অনিবার্য হয়ে উঠছে।
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে পশ্চিমা বিশ্ব তথা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় একটি নতুন তহবিলের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা যুক্তি দেখিয়েছিল যে বিদ্যমান তহবিল থেকেই এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা উচিত। গত শুক্রবার সকালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন শর্ত সাপেক্ষে একটি তহবিল গঠনে সম্মতি দিয়ে ইউটার্ন করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্স টিমারম্যানস অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়ন তহবিল প্রতিষ্ঠা করতে সম্মতিসূচক একটি প্রস্তাব দেন। সমান্তরালভাবে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৫ সালের মধ্যে দেড় ডিগ্রি লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জাতীয় পরিকল্পনাগুলোকে আরও শক্তিশালী বিধানসহ নির্গমন কমানোর বিষয়ে আরও উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রস্তাব দেন।
কিন্তু অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়ন তহবিল বিষয়ে তাঁরা শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন যে উন্নয়নশীল বড় অর্থনীতির বিশাল নির্গমনকারী দেশগুলোকেও সম্ভাব্য দাতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এবং তহবিল প্রাপক হিসেবে বাদ দেওয়া দরকার।
যুক্তিটি ছিল, চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি ক্রমবর্ধমান নির্গমনের জন্য দায়ী। সৌদি আরব, রাশিয়া, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, ভারতসহ ওই দেশসমূহ ১৯৯২ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ হলেও এখন ক্রমবর্ধমান ঐতিহাসিক নির্গমনের শীর্ষ দশে অবস্থান করছে।
৩০ বছর আগে জলবায়ু কনভেনশনের মূল চুক্তির অধীনে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে পার্থক্যরেখা নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। ‘সবার কিন্তু আলাদা দায়িত্ব’ প্রতিশ্রুতির অধীনে ধনী দেশগুলো বিশাল অংশের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী হিসেবে প্রয়োজনীয় কার্বন ডাই–অক্সাইড হ্রাস করবে। উন্নয়নশীল দেশসমূহকে চরম আবহাওয়ার প্রভাবগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে।
উন্নত দেশগুলো শিল্পবিপ্লবের পর থেকে তাদের প্রচুর গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাধ্যমে জলবায়ু সংকটের বেশির ভাগই তৈরি করেছে। ইতিমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশগুলো বৈশ্বিক নির্গমনের একটি ক্ষুদ্র অংশের জন্য দায়ী হলেও সবচেয়ে বেশি অভিঘাতে ভুগছে। তাদের খাপ খাইয়ে নিতে অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান প্রয়োজন এবং ন্যায্যতার বিচারে তাঁরা তা প্রাপ্য।
জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু ন্যায়বিচারের ধারণাটি নাগরিক সমাজের আন্দোলনের মধ্যে বিকশিত হয়েছে। উন্নত বিশ্ব উন্নয়নশীল দেশসমূহের কাছে জলবায়ু ঋণে ঋণী। ক্ষতিপূরণের ধারণা জলবায়ু ন্যায়বিচারের একটি কেন্দ্রীয় নীতিতে পরিণত হয়েছে। ঋণ বাতিলও একটি প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে। জলবায়ু জরুরি অবস্থার সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং ক্ষতিপূরণের দাবি তীব্রতর হয়েছে।
অন্য প্রধান উদ্বেগ রয়েই গেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে অভিযোজনের জন্য মোট তহবিল প্রয়োজন কমপক্ষে আড়াই ট্রিলিয়ন। কিন্তু এ লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে কোনো দৃশ্যমান প্রতিশ্রুতি নেই৷
জীবাশ্ম জ্বালানির অপ্রতিরোধ্য যাত্রা
কপ-২৭-এ আশা করা হয়েছিল যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ তথা কয়লা, গ্যাস এবং তেল পোড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুতর হ্রাসবিষয়ক সিদ্ধান্ত হবে। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর জন্য ভারতের আহ্বান থেকে এ আশাবাদ জন্মেছিল। যদিও প্রস্তাবটিতে বড় ঘাটতি ছিল। প্রস্তাবে ফেজ আউট নয়; ফেজ ডাউন বা পর্যায়ক্রমে হ্রাস বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রস্তাবটি বড় ধরনের আলোচনার দিকে ধাবিত করেনি এবং সংকটময় মৌল সমস্যা রয়েই গেল।
চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে বেসরকারি খাতের সাতটি বৃহত্তম তেল কোম্পানি প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার মুনাফা করেছে। তবু সরকারগুলো তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলোকে বছরে ৬৪ বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি দিয়ে এ লুটপাটকে সমর্থন করে চলেছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, অনুমোদনপ্রাপ্ত নতুন তেল ও গ্যাসক্ষেত্র বাস্তবায়িত হলে দেড় ডিগ্রির বেশি বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রতিরোধের আর কোনো সম্ভাব্য উপায় নেই। তবু জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিগুলো সরকারের উৎসাহে বড় বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিকল্পনা করে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় পরিকল্পিত সম্প্রসারণ হচ্ছে। ঘোষিত এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বর্তমানে নিঃসরিত কার্বন ডাই-অক্সাইডের সঙ্গে তা আরও প্রায় ১০ শতাংশ যোগ করবে। নতুন তথ্য অনুসারে, বিশ্বজুড়ে এলএনজির (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) অতিরিক্ত সরবরাহ হবে। এই দশকের শেষ নাগাদ প্রায় ৫০০ মেগাটন এলএনজি উৎপাদন হতে পারে, যা রাশিয়া থেকে ইউরোপে আমদানি করা সরবরাহের প্রায় পাঁচ গুণ এবং রাশিয়ার মোট গ্যাস রপ্তানির প্রায় দ্বিগুণ। গ্যাস উত্তোলনের এই বৈশ্বিক উন্মাদনা জলবায়ু বিপর্যয়কে ত্বরান্বিত করবে।
শার্ম আল-শেখের সম্মেলনে তেল ও গ্যাসশিল্পের ৬৩৬ জন প্রতিনিধি রয়েছেন। আগের বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। গ্লাসগোতে এ সংখ্যা ছিল ৫০৩। দূষণকারী লবিস্টদের নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় নিরবচ্ছিন্ন অধিকার দেওয়া হলে জলবায়ু সংকটের অর্থপূর্ণ মোকাবিলা ব্যাহত হবে। জাতিসংঘের (ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা ইউএনএফসিসি) ক্রিটিক্যাল বা গুরুত্বপূর্ণ কাজকে প্রভাবিত করে কার্যকারিতাকে দুর্বল করে দেবে।
জলবায়ু সংক্রান্ত লক্ষ্য
১৯৭২ সালে পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় প্রথম আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলন হয়েছিল। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি শক্তিশালী দেশ ওই সভায় ‘অনানুষ্ঠানিক এবং গোপনীয়’ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল। যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত ভাষ্যমতে, দরিদ্র দেশগুলো যা চায়, যাতে তা না পায় তা নিশ্চিত করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এবং দূষণ বা পরিবেশগত মানের বিষয়ে কোনো আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে সম্মত না হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল।
৫০ বছরের সৃষ্ট ব্যর্থতার কারণেই জলবায়ু–সংক্রান্ত ৪০টি সম্মত লক্ষ্যগুলোর একটিও ট্র্যাকে নেই। কিন্তু ইতিমধ্যে সৃষ্ট পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে
খাপ খাইয়ে নেওয়ার পাশাপাশি গ্রহের আরও উত্তাপকে যতটা সম্ভব কম রাখার জন্য জরুরিভাবে নির্গমন কমাতে এখনো অনেক শক্ত ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপের প্রয়োজন।
কপ-২৭-এর অন্যতম লক্ষ্য ছিল গ্লাসগোতে গত বছরের জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে প্রদত্ত নির্গমন প্রতিশ্রুতিকে শক্তিশালী করা। এটি বৈশ্বিক উত্তাপ দেড় ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ নিশ্চিত করার জন্য অতীব প্রয়োজন ছিল। মিসরে এমন কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। বেশির ভাগ পর্যবেক্ষক এখন এ উপসংহারে পৌঁছেছেন যে বিশ্ব এ সীমা ছাড়িয়ে বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
কার্বন নিঃসরণ সীমিত করার প্রচেষ্টার মাধ্যমে গ্রহের উত্তাপকে কমিয়ে আনা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার একমাত্র উপায়। তাহলে বন্যা, খরা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ফসলের বিপর্যয়ের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ হবে। অভিযোজনের মধ্যে বন্যার প্রতিরক্ষা, উচ্চ ভূমিতে জনবসতিকে নিয়ে যাওয়া এবং ঝড় ও জলাবদ্ধতা থেকে সড়ক ও রেল সংযোগ রক্ষা আবশ্যিক। বিজ্ঞানীরা আবারও সতর্ক করেছেন যে প্রতিশ্রুত তহবিলের মাত্রা এখনো অদূর ভবিষ্যতে যে বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে, তার থেকে অনেক নিচে রয়েছে।
প্রকৃতির সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের যোগসূত্র আলোচনা হয়নি
গ্রহের উত্তাপ বিশ্বজুড়ে আবাসস্থল ধ্বংসের হুমকি দেয়। হাজার হাজার প্রজাতিকে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ফেলেছে। মেরু অঞ্চলের ভালুক এবং বাঘ থেকে শুরু করে প্রজাপতি এবং সামুদ্রিক কচ্ছপ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে। প্রবাল প্রাচীর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। প্রবাল প্রাচীর হাজার হাজার প্রজাতির জন্য বাসস্থান প্রদান করে। বিজ্ঞানীদের মতে, দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস গ্রহের উত্তাপে প্রবাল প্রাচীরের ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ অদৃশ্য হয়ে যাবে। ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ৯৯ শতাংশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
আগামী মাসে জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য সম্মেলনে এ ধরনের হুমকি নিয়ে দর–কষাকষি হবে। কানাডার মন্ট্রিলে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য ফ্রেমওয়ার্ক গৃহীত হবে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রজাতির ক্ষতির মধ্যে শক্তিশালী যোগসূত্র থাকা সত্ত্বেও মিসরে সম্মেলনের এ বিষয়ে কোনো উল্লেখ করা হয়নি। স্বার্থের দোলাচলে বাসযোগ্য পৃথিবী কি হারিয়ে যাবে? নতুন প্রজন্ম সোচ্চার—আশার জায়গা থেকেই যায়।
● ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও ‘উন্নয়ন অন্বেষণ’–এর চেয়ারপারসন