ভাগনারের বিদ্রোহের ওপর নজর রাখছেন যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা।
রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্ব নিয়ে আগে থেকেই নাখোশ ছিলেন ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন। ইউক্রেনে যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার হয়ে লড়ার সময়ও নানা অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ বিদ্রোহের ঘোষণা দিলেন ভাগনারপ্রধান। রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতে হুমকি দিয়েছেন তিনি।
ভাগনারের যোদ্ধারা ইউক্রেন সীমান্ত থেকে এগিয়ে যাচ্ছেন মস্কোর দিকে। এরই মধ্যে সীমান্তবর্তী রাশিয়ার রোস্তভ-অন-দন শহর দখলের দাবি করেছে বাহিনীটি। ভোরোনেঝ শহরের একটি সামরিক ঘাঁটিও তাদের দখলে রয়েছে বলে জানা গেছে। এই ঘাঁটির অবস্থান মস্কো ও রোস্তভ-অন-দনের মাঝামাঝি অঞ্চলে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মস্কোয় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ভাগনারের ওই বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে বড় চাপের মধ্যে পড়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরই মধ্যে শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘এই কর্মকাণ্ড রাশিয়ার জনগণের পিঠে ছুরি চালানোর মতো।’ রাশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন বিশ্বনেতাদের অনেকেই।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া যে দুর্বল, তা দেখিয়ে দিয়েছে ভাগনারের বিদ্রোহ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া যে দুর্বল, তা স্পষ্ট। তারা পুরোপুরিভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। আর যত দিন রাশিয়া নিজেদের সেনাসদস্য ও ভাড়াটে যোদ্ধাদের আমাদের মাটিতে রাখবে, তত দিন তাদের এমন বিশৃঙ্খলা, যন্ত্রণা ও সমস্যা নিয়ে চলতে হবে।’
রাশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাডাম হজ। তিনি বলেছেন, ‘রাশিয়ায় যা ঘটছে, তা নিয়ে মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করবে ওয়াশিংটন।’ তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।’
ভাগনারের বিদ্রোহের ওপর নজর রাখছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারাও। জোটটির প্রধান চার্লস মাইকেল টুইটারে লিখেছেন, ‘রাশিয়ার পরিস্থিতি সামনে আসার পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’ অপর দিকে ‘সব পক্ষকে দায়িত্বশীল থাকার ও বেসামরিক মানুষের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার’ আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
ভাগনারের বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে রাশিয়া সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এক টুইট করে তারা বলেছে, ‘এই সংকট কীভাবে সামলানো হবে, তা আগামী কয়েক ঘণ্টায় নির্ভর করবে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিশ্বস্ততার ওপর।’
রাশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন, নরওয়ে ও বেলজিয়ামও। দেশটির ওপর তারা গভীরভাবে নজরদারি করছে বলে জানিয়েছে। একই সঙ্গে ইউক্রেনের প্রতি নিজেদের সমর্থন অটুট রাখার ঘোষণা দিয়েছে তারা।