সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রথমবারের মতো দৈনিক ব্যবহারকারী গড়ে ২০০ কোটির মাইলফলক ছুঁয়েছে। এই সংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক–চতুর্থাংশ।
তবে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটা গতকাল বুধবার জানিয়েছে, ২০১২ সালে কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এই প্রথম বিক্রি কমেছে। তবে এই পরিমাণ আশঙ্কার চেয়ে তুলনামূলক কম বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বৃহৎ এই প্রতিষ্ঠান বলেছে, ২০২২ সালের তাদের বিক্রি ১ শতাংশ কমেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এই সাফল্যের পেছনে মেটার ভিডিও সার্ভিসের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের ব্যবহারকারীরা রিলের ছোট ছোট ভিডিও দেখতে পারেন। অবশ্য চীনের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্ম টিকটকের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে রিলকে।
জাকারবার্গ বলেন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে দৈনিক ব্যবহারকারী যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। গত বছর মেটা বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বলেছিল, ফেসবুকে এই প্রথম দৈনিক ব্যবহারকারী কমছে। তারা ইঙ্গিত দিয়েছিল, মেটা এখন মেটাভার্স হিসেবে পরিচিত ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটিতে বিনিয়োগে গুরুত্ব দিচ্ছে।
তবে গত ডিসেম্বরে বছরের প্রথম দিকের তুলনায় দৈনিক ব্যবহারকারী ৪ শতাংশ বেড়েছে। ইউরোপের দেশ, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায়ও ব্যবহারকারী বেড়েছে।
মেটা বলেছে, তাদের সব অ্যাপে সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বেশ বেড়েছে।
মেটার জন্য ২০২২ সাল ছিল খারাপ একটি বছর। গত বছরের নভেম্বরে প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দেয়, তারা প্রতিষ্ঠানের মোট ১১ হাজার বা ১৩ শতাংশ কর্মীকে ছাঁটাই করবে। প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে কখনো এক সঙ্গে এত বেশি কর্মী ছাঁটাই করা হয়নি।
জাকারবার্গ বলেন, ‘২০২৩ সালে আমার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার প্রতিপাদ্য হচ্ছে “দক্ষতার বছর”। আমরা আরও শক্তিশালী ও গতিময় প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।’
জাকারবার্গ আরও বলেন, মাঝের স্তরের ব্যবস্থাপনা বাদ দেওয়ার জন্য কাজ করছে মেটা। একই সঙ্গে প্রকৌশলীদের আরও ফলপ্রসূ করে তুলতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের ব্যবহার নিয়ে কাজ চলছে।
মেটার প্রধান নির্বাহী বলেন, ভালো করছে না বা অগ্রাধিকার তালিকায় নেই—এমন প্রকল্প কাটছাঁটে মেটা আরও বেশি তৎপর হয়ে কাজ করবে।
অর্থনৈতিক এই সংকটের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বৃহৎ এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসাও ভালো যাচ্ছে না। বিজ্ঞাপনদাতারা এ সময় বিজ্ঞাপন খাতে খরচ কমাতে বাধ্য হচ্ছেন।