পাকিস্তানে গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঘিরে কারচুপি, ফল নিয়ে কারসাজি ও জনরায় চুরির অভিযোগে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কর্মী-সমর্থকেরা।
দলের ডাকা বিক্ষোভে সাড়া দিয়ে গতকাল রোববার দলটির কর্মী-সমর্থকেরা রাওয়ালপিন্ডি থেকে শুরু করে করাচি, খান্দকট, তানকসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে আসেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিতে না পেরে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেন পিটিআই নেতারা। এককভাবে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া গ্রুপ হিসেবে এরপর তাঁরা যোগ দেন সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে (এসআইসি)। ওই নির্বাচনের পর জোট বেঁধে কেন্দ্রে সরকার গঠন করেছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টিসহ (পিপিপি) কয়েকটি দল। জাতীয় নির্বাচন-পরবর্তী রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ। প্রেসিডেন্ট হয়েছেন পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি।
তবে নির্বাচনের পর থেকেই পিটিআই কারচুপি এবং নির্বাচনী ফলাফল কারসাজির গুরুতর অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করছে। পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা বর্তমানে কারাবন্দী ইমরান খান ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের স্বচ্ছতার দাবি তুলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে (আইএমএফ) চিঠি দিয়েছেন।
এদিকে গতকালের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে লাহোরে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ। সেখানকার জিপিও চক এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন পিটিআই কর্মী ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শহরের মল রোড ও অন্য এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়। করাচি ও সিন্ধু এলাকায় পিটিআই সমর্থকদের ঠেকাতে পুলিশ ও রেঞ্জার্সের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। রাওয়ালপিন্ডিতে পিটিআই সমর্থক ও পুলিশ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। সেখানে একটি মিছিল শহরে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। তানকের পাশাপাশি ফয়সালাবাদ, ভেহারি, খুশাব, ইসলামাবাদ, মুলতান, গুজরানওয়ালার মতো শহরেও বিক্ষোভ হয়েছে।
পিটিআই ও এসআইসি জোট গত শনিবার জাতীয় পরিষদের স্পিকার সর্দার আয়াজ সাদিকের কাছে পিটিআই নেতা ওমর আইয়ুব খানকে বিরোধী দলের নেতা মনোনীত করে নথি জমা দিয়েছে। জাতীয় পরিষদে সংরক্ষিত আসন পেতে পিটিআই-সমর্থিত ৯০ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এসআইসিতে যোগ দেন। এসআইসির প্রধান সাহেবজাদা হামিদ রাজা, সংসদ সদস্য আলী মোহাম্মদ খান, রিয়াজ ফাতিয়ানা, নিসার আহমদ জাট এবং অন্যান্যের উপস্থিতিতে মালিক আমির ডোগার মনোনয়নপত্র জমা দেন। পিটিআই সমর্থিত সব সদস্য এতে সই করেছেন।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ঐতিহ্য অনুযায়ী, বিরোধী দলের নেতা কথা বলতে চাইলে তিনি সে সুযোগ পান। তিনি মন্ত্রীর মর্যাদা পান। এ ছাড়া তিনি আলাদা কার্যালয়ও পেয়ে থাকেন।