পাকিস্তানে মারিয়া বিবি নামে ২২ বছরের এক তরুণীকে হত্যার অভিযোগে তাঁর ভাই শেহবাজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে, ‘পরিবারের সম্মান রক্ষায়’ (অনার কিলিং) ওই তরুণীকে হত্যা করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
শেহবাজ এ ঘটনা ভিডিও করে অনলাইনে ছেড়েছেন। পরে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। গতকাল রোববার তাঁকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় পাকিস্তানের পুলিশ।
মারিয়া পরিবারসহ পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের তোবা তেক সিং শহরের পাশে থাকতেন। গত ১৭ মার্চ রাতে বাড়িতে খুন হন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, বাবা আবদুল সাত্তারের উপস্থিতিতে মারিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন ভাই মোহাম্মদ ফয়সাল।
পুরো ঘটনাটি মুঠোফোনে ভিডিও করেন মারিয়ার আরেক ভাই শেহবাজ। ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। এতে দেখা গেছে, রাতের বেলা বিছানায় মারিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করছেন ভাই ফয়সাল। বাবা পাশেই বসে আছেন।
ভিডিওতে শেহবাজকে বলতে শোনা যায়, ‘বাবা, তাঁকে (ভাই) সরে যেতে বলুন।’ কিন্তু ফয়সাল সরেননি। বোনের নিথর শরীরে দুই মিনিটের বেশি সময় ধরে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন তিনি।
‘কাজ শেষ’ হলে ফয়সালকে পানি পান করতে বলেন তাঁর বাবা।
এ বিষয়ে পাঞ্জাবের তোবা তেক সিং শহরের পুলিশ কর্মকর্তা আতাউল্লাহ মুঠোফোনে এএফপিকে বলেন, গত ২৪ মার্চ পুলিশ বুঝতে পারে মারিয়া বিবির মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মামলার পরপরই মারিয়া বিবির বাবা ও এক ভাইকে (ফয়সাল) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরেক ভাই শেহবাজকে গত শনিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়।
শুধু তা–ই নয়, শেহবাজের স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওতে তাঁকেও দেখা গেছে। প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় ‘পরিবারের সম্মান রক্ষায়’ হত্যার যাবতীয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশটিতে ‘পরিবারের সম্মান রক্ষার জন্য’ ৩১৬ নারী অপরাধের শিকার হয়েছেন। যদিও অনেক ঘটনা আড়ালে রয়ে গেছে।
মরিয়াকে কেন তাঁর বাবা ও ভাই মিলে হত্যা করলেন, সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে পুলিশ বলছে, মারিয়াকে বেশ কয়েকবার ভিডিও কলে কারও সঙ্গে কথা বলতে দেখে ফেলেছিলেন ভাই ফয়সাল। খুনের পেছনে এটা একটা কারণ হতে পারে।