পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও তাঁর ছেলে হামজা শাহবাজকে ১ হাজার ৬০০ কোটি রুপি পাচারের মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফআইএ) মামলাটি করেছিল। খবর জিও নিউজের।
আদালতকে এফআইএ জানায়, বাবা ও ছেলে দুজনের কারও ব্যাংক হিসাবে সরাসরি কোনো অর্থ জমা হয়নি। এরপর শাহবাজ পরিবারের বিরুদ্ধে করা এই মেগা অর্থপাচার মামলায় আদালত রায় ঘোষণা করেন।
এদিন বাবা-ছেলেকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করা হলেও দুজনের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। শাহবাজ দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত আর হামজা অসুস্থ থাকায় হাজিরা থেকে অব্যাহতি চান তাঁদের আইনজীবী।
‘কোনো সরাসরি সাক্ষ্যপ্রমাণ’ না থাকায় ১ হাজার ৬০০ কোটি রুপি পাচারের অভিযোগ থেকে গত সপ্তাহে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতাদের অব্যাহতি দেয় এফআইএ। এরপর গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ছেলেকে খালাস দেন আদালত।
শুনানিতে এফআইএর কৌঁসুলি ফারুক বাজওয়া সন্দেহভাজনদের খালাস দেওয়ার বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ১ হাজার ৬০০ কোটি রুপি পাচারের ঘটনায় হামজা ও শাহবাজের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আদালতকে তিনি বলেন, ‘আমরা এই মামলা চালিয়ে যেতে চাই। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম চলা উচিত।’
তবে বিশেষ আদালতের বিচারক ইজাজ আওয়ান বলেন, আদালতে দাখিল করা চালান প্রতিবেদনে সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে ‘অকাট্য সাক্ষ্যপ্রমাণ’ দিতে পারেনি এফআইএ। ফলে আদালত সন্দেহভাজনদের খালাস দিয়েছেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলাটি ‘ভুয়া ও ভিত্তিহীন’ এবং ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে’ মামলাটি করা হয়েছিল বলে এক টুইটে মন্তব্য করেন তিনি।
তবে রায়ের সমালোচনা করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। এক সমাবেশে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ছেলেকে খালাস দেওয়ার মাধ্যমে তাঁদের কয়েক শ কোটি রুপি চুরি ধামাচাপা দেওয়া হলো।
গত বছরের ডিসেম্বরে শাহবাজ ও হামজার বিরুদ্ধে বিশেষ আদালতে এফআইএর দাখিল করা চালান প্রতিবেদনে চিনি কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৬০০ কোটি রুপি পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়।
আদালতে দাখিল করা এফআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, তদন্তকারী দল শাহবাজ পরিবারে ২৮টি বেনামি ব্যাংক হিসাব চিহ্নিত করেছে। এসব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২০০৮-১৮ সালের মধ্যে ১ হাজার ৬৩০ কোটি রুপি পাচার করা হয়।