ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ ঘটনাকে ‘ভয়ংকর’ ও ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
ইমরান খান বলেন, রুশদির উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর কারণে মুসলিম বিশ্বের ক্ষোভের বিষয়টি বোঝা যায়, কিন্তু এটি হামলার ন্যায্যতা দেয় না।
তালেবানের বিধিনিষেধের মুখে থাকা আফগান নারীরা ‘তাঁদের অধিকার আদায় করে নেবে’ বলেও দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
গত এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর রাজনীতির মাঠে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ইমরান খান। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান বলেন, তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে এবং ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।
দলের জন্য বেআইনিভাবে তহবিল সংগ্রহের আট বছরের পুরোনো অভিযোগের বিরুদ্ধে ইমরান খান লড়ছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ হতে পারেন তিনি।
১০ বছর আগে রুশদি উপস্থিত থাকবেন জেনে ভারতে এক অনুষ্ঠান বর্জন করেছিলেন ইমরান খান। এ ঘটনায় কাদা–ছোড়াছুড়িতেও জড়ান দুজন। কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই লেখকের বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ড সমর্থন করছেন না ইমরান খান।
রুশদির ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। তবে একটি অঞ্চলের (এশিয়া) রাজনীতিকেরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
নিউইয়র্কে ছুরি হামলায় রুশদির গুরুতর জখম হওয়ার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ইমরান খান বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা ভয়ংকর, দুঃখজনক।’
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রুশদি বিষয়টি বোঝেন। কারণ, মুসলিম পরিবারেই তাঁর জন্ম। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর জন্য আমাদের হৃদয়ে থাকা ভালোবাসা, সম্মান ও ভক্তি-শ্রদ্ধার বিষয়টি তাঁর জানা আছে। তিনি জানেন।’
ইমরান খান বলেন, ‘তাই আমি (মুসলিমদের) ক্ষোভের বিষয়টি বুঝতে পারি। কিন্তু যা ঘটেছে, আপনি সেটার ন্যায্যতা দিতে পারেন না।’
এক বছর আগে ইমরান খান তালেবানের ক্ষমতা দখলকে স্বাগত জানিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব ও আফগানদের অনেককে হতবুদ্ধ করেছিলেন। তিনি ওই ঘটনাকে ‘দাসত্বের শিকল ভাঙা’ অভিহিত করেছিলেন।
নারীদের সঙ্গে তালেবানের আচরণের পক্ষ নিয়ে ইমরান খান বলেন, এটা স্থানীয় ‘সাংস্কৃতিক চর্চা’। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক সমাজে মানবাধিকারের নিজস্ব ধারণা আছে এবং নারী অধিকারও আলাদা।’
তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের এক বছর হয়েছে। নারীদের আফগান শ্রমশক্তিতে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। ১৪ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের স্কুল যাওয়াও নিষিদ্ধ রয়েছে।
তবে ইমরান খান বলছেন, আফগানিস্তানের ভেতর থেকেই পরিবর্তনটা আসতে হবে।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত আফগান নারীরা, আফগান জনগণ তাঁদের অধিকার আদায় করে নেবেন। তাঁরা দৃঢ়চেতা মানুষ।’
ইমরান বলেন, ‘কিন্তু আপনি যদি তালেবানকে বাইরে থেকে চাপ দেন, তাদের যা মনোভাব, ঠিকই তারা তার বিরোধিতা করবে। তারা বাইরের হস্তক্ষেপ একেবারেই পছন্দ করে না।’