পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের মামলায় জামিন পেয়েছেন। আজ শুক্রবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এ আদেশ দেন। ইমরানের সঙ্গে জামিন পেয়েছেন ইমরানের দলের নেতা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশিও।
ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ ইমরান ও কোরেশির জামিন মঞ্জুর করেন। আদালত এ দুই নেতার প্রত্যেকের নামে ১০ লাখ রুপি মূল্যের বন্ড জমা দিতে বলেছেন।
এ মামলায় দুজনেই গ্রেপ্তার হয়ে এখন আদিয়ালা কারাগারে বন্দী। ইমরানের বিরুদ্ধে এই মামলা ছাড়াও তোশাখানা মামলাসহ অনেকগুলো মামলা আছে।
সুপ্রিম কোর্টের জামিন আদেশের পর আদালতের বাইরে পিটিআইয়ের আইনজীবী সালমার সাফার গণমাধ্যমকে বলেন, কোরেশিকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি দেওয়া উচিত। আর ইমরান খানের বিরুদ্ধে হওয়া অনেকগুলো মামলায় আগাম জামিন রয়েছে, আবার অনেকগুলো বিচারাধীন। তিনি বলেন, ‘আজ তিনজন বিচারপতিই একমত হয়েছেন, এই নথি ফাঁসের মামলা রাজনৈতিক নিপীড়নমূলক। এভাবে আপনি সবার জন্য সমান সুযোগ আশা করতে পারেন না।’ সালমার সাফারের দাবি, নথি ফাঁসের মামলার আর কোনো আইনগত ভিত্তি থাকল না।
এদিকে পিটিআইয়ের আরেক আইনজীবী ইউসুফ চৌধুরী এএফপিকে বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে ইমরানের ছাড়া পাওয়ার আশা খুবই কম।
রাষ্ট্রীয় নথি ফাঁসের মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, একটি কূটনৈতিক তারবার্তা ইমরান ফেরত দেননি। পিটিআই দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, ওই তারবার্তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ষড়যন্ত্র করেছিল।
গত বছরের এপ্রিলে দেশটির পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ৭১ বছর বয়সী ইমরান খান।
গত অক্টোবর মাসে আদিয়ালা কারাগারের অভ্যন্তরে আদালত বসিয়ে এ মামলায় ইমরান ও কোরেশিকে অভিযুক্ত করা হয়। কিন্তু কারাগারের ভেতরে এভাবে গোপনে বিচার করাকে বেআইনি ঘোষণা করে পুরো বিচারপ্রক্রিয়া বাতিল করেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। পরে কারা চত্বরে উন্মুক্ত আদালতে বিচারের সিদ্ধান্ত নেন বিশেষ আদালত।
এরপর ১৩ ডিসেম্বর এ মামলায় ইমরান ও কোরেশি দ্বিতীয়বার অভিযুক্ত হন। গত সপ্তাহে আদিয়ালা জেলা কারাগারে বিশেষ আদালতে নতুন করে এ বিচার শুরু হয়।
গত মাসে পিটিআই এই মামলায় ইমরানের গ্রেপ্তার–পরবর্তী জামিন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইমরানের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করা হয়েছে। ইমরান খান দাবি করে আসছেন, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে তাঁর অংশগ্রহণ ঠেকাতে সরকার ও সেনাবাহিনীর চক্রান্তে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব মামলা দেওয়া হয়েছে।