পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ দলের চেয়ারম্যান ইমরান খান যখন বুশরা বিবিকে বিয়ে করেন, তখন তাঁর ইদ্দতকালীন (তালাক বা স্বামীর মৃত্যুর পর নারীদের ধর্মীয় বিধানমতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিয়ে থেকে বিরত থাকা) সময় পার হয়নি। গত বুধবার ইসলামাবাদের একটি আদালতে তাঁদের বিয়ে পড়ানোর দায়িত্ব পালনকারী মুফতি মোহাম্মদ সাঈদ এই দাবি করেছেন।
গত বুধবার (১২ এপ্রিল) মুফতি সাঈদ ইসলামাবাদের একটি স্থানীয় আদালতে তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করার সময় এমন দাবি করেন। বুশরা বিবির ইদ্দতের সময় পার হওয়ার আগেই ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে নিয়ে ইসলামাবাদের একটি আদালতে পিটিশন করা হয়েছে। এ পিটিশনের শুনানিতে হাজির হন মুফতি সাঈদ।
ইদ্দত হল তালাক বা স্বামী মারা যাওয়ার পর ধর্মীয় বিধানমতে যে সময়ের মধ্যে একজন নারী বিয়ে করতে পারেন না, সেই সময়কাল।
ইমরান খান ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বুশরা বিবিকে বিয়ে করেন। এটি ছিল তাঁর তৃতীয় বিয়ে।
সাবেক পিটিআই নেতা ও ইমরান খানের বন্ধু জুলফি বুখারি ও আওন চৌধুরী বলেন, লাহোরে মুফতি সাঈদ একান্তে ইমরান ও বুশরার বিয়ে পড়ান। তাঁরা দুজন সাক্ষী ছিলেন।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে মুফতি সাঈদ বলেন, ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ও তিনি পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন। ইমরান খান ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ইমরান খান তাঁকে ওই সময় বুশরা বিবির সঙ্গে বিয়ে পড়িয়ে দিতে বলেছিলেন। তখন বুশরা বিবির বোন পরিচয় দেওয়া একজন বলেছিলেন—তাঁর ইদ্দত পালন সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া শরিয়ত মোতাবেক সবকিছুই করা হয়েছে। তাঁর ওই বোনের কথা শুনে তখন তিনি দুজনের বিয়ে পড়িয়েছিলেন।
মুফতি সাঈদ বলেন, ‘কিছু দিন পর ইমরান জানতে পারেন, বুশরা তার সম্পূর্ণ ইদ্দত পালন করেননি। এরপর তিনি ধর্মীয় বিধান মেনে আমাকে দিয়ে আবার বিয়ে পড়ান।’
মুফতি সাঈদ আরও বলেন, দ্বিতীয়বার বিয়ে পড়ানোর সময় আমাকে বলা হয়, ২০১৭ সালের নভেম্বরে বুশরা বিবির তালাক হয়েছিল। আগে বিয়ের সময় তাঁর ইদ্দত সম্পন্ন হয়নি। তাই আবার বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। তবে তাঁদের একটি ধারণা ছিল, ১ জানুয়ারি যদি ইমরান খান বুশরাকে বিয়ে করেন, তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন।’
মুফতি সাঈদের অভিযোগ, শুধু একটি ধারণা বা পূর্বাভাসের ওপর ভিত্তি করে অবৈধ বা ইসলামবহির্ভূত নিয়মে বিয়ে করেছিলেন ইমরান খান ও বুশরা বিবি।