পাকিস্তানের পেশোয়ারে একটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৫৯ জন নিহত হয়েছেন। যেখান হামলার ঘটনা ঘটেছে সে এলাকাটি কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই ছিল। তাই পুলিশকে লক্ষ্য করেই এ হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, যাঁরা পাকিস্তান রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন, তাঁদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা ভীতি সৃষ্টি করতে চায়।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, এ হামলার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। গত বছর নভেম্বরে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে ‘যুদ্ধবিরতির’ সমাপ্তি টানে জঙ্গি সংগঠন । এরপর থেকে দেশটিতে হামলার ঘটনা বেড়েছে। গত ডিসেম্বের দেশটির উত্তরাঞ্চলে একটি টিটিপির হামলায় ৩৩ জন নিহত হন।
প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল সোমবার জোহরের নামাজের সময় এ বিস্ফোরণ ঘটান একজন আত্মঘাতী হামলাকারী। তখন মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন কয়েক শ মুসল্লি। হাসপাতালের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, এ হামলায় মৃত্যু বেড়ে ৫৯ জন হয়েছে। আহতের সংখ্যা ১৫৭ জন।
পেশোয়ার শহরটি আফগানিস্তান সীমান্তসংলগ্ন। এটি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের রাজধানী। শহরের সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হয় পুলিশ লাইনসকে। পুলিশের এ আঞ্চলিক সদর দপ্তরে গোয়েন্দা বিভাগ, কাউন্টার টেররিজম ব্যুরো এবং এর পাশে প্রাদেশিক সরকারের সচিবালয়ের অবস্থান।
পাকিস্তানের একজন নেতৃস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, পুলিশকে লক্ষ্য করে সম্ভবত হামলা হয়েছে। পেশোয়ার নগরের পুলিশের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইজাজ খান স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিস্ফোরণের সময় ওই এলাকায় ৩০০ থেকে ৪০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা ছিল।
মসজিদে হামলার ঘটনার পরপরই পেশোয়ারসহ সারা দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেয় সরকার। এ ছাড়া রাজধানী ইসলামাবাদে নিরাপত্তাসংক্রান্ত উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, এ হামলার পেছনে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পেশোয়ার সিটি ডেপুটি কমিশনার শাফিউল্লাহ খান বলেন, মসজিদের ভেতরে উদ্ধারকাজ চলছে। আরও মৃতদেহ বের করা হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কেউ জীবিত আছে কিনা সে বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ওই এলাকায় যাচ্ছেন।
হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিব নিন্দা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পাকিস্তান সফরের আগেই এ হামলার ঘটনা ঘটল।