আফগানিস্তানে সন্ত্রাসীদের অবস্থান করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর। তারা বলছে, পাকিস্তানের ভূখণ্ডে এবং দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে আফগানিস্তান থেকে আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করছে সন্ত্রাসীরা।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ওপর হামলার পরিমাণ বেড়েছে। বিভিন্ন সময় এসব হামলার জন্য আফগানিস্তানের দিকে আঙুল তুলেছে পাকিস্তান। তবে এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে আফগানিস্তান। এরই মধ্যে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর নতুন এই অভিযোগ আনল।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আফগানিস্তানে সন্ত্রাসীদের হাতে আধুনিক অস্ত্র পৌঁছে যাচ্ছে। সেই সব অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে পাকিস্তানে হামলায়। তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ জরুরি। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অংশীজনদের পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান।
সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সম্প্রতি বেশ বিপাকে পড়েছে পাকিস্তান। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে দেশটিতে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা ছিল ৭৯ শতাংশ বেশি। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (পিআইসিএসএস) নামের একটি চিন্তন প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত পাকিস্তানে অন্তত ২৭১টি জঙ্গি হামলায় ৩৮৯ জনের প্রাণহানি ও ৬৫৬ জন আহত হয়েছেন। তবে এতে হাল ছাড়তে নারাজ পাকিস্তান। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বলেন, সন্ত্রাসীদের হুমকি নির্মূলে পাকিস্তানের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা জোরদার করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর ওপর গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে। এসব হামলায় পরোক্ষ দায় অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপরও চাপিয়েছে পাকিস্তান। সম্প্রতি দেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন আনোয়ারুল হক কাকার ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মাসুদ খান বলেছেন, আফগানিস্তানে যেসব অস্ত্র মার্কিন বাহিনী ফেলে গেছে, সেগুলো পড়েছে সন্ত্রাসীদের হাতে।
এরপর মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা আফগানিস্তান থেকে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়টি সামনে আনলেন।
পাকিস্তানের তোলা এসব অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহেই নাকচ করেছে। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগ সমন্বয়কারী জন কিরবি বলেছেন, তাদের কোনো অস্ত্র আফগানিস্তানের সন্ত্রাসীদের হাত পড়েনি; বরং তালেবান যখন কাবুল দখল করেছে, আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনী অস্ত্র ফেলে পালিয়েছে।