পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করেছেন পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা। একই অভিযোগে বিক্ষোভ করেছে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ছোট কয়েকটি দলও। কয়েকটি শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘাতের খবর পাওয়া গেছে।
গত বৃহস্পতিবার নির্বাচনের পর থেকে বিক্ষোভ করে আসছেন পিটিআই সমর্থকেরা। এরই মধ্যে ফল প্রকাশে বিলম্বের মাধ্যমে ‘কারচুপি’ হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে আজ রোববার পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল দলটি। ওই আহ্বানের পর আজ সারা দেশে বিক্ষোভ জোরদার হয়েছে।
আজ ইসলামাবাদ, লাহোর, করাচি, রাওয়ালপিন্ডি, পেশোয়ারসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছেন পিটিআই নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। এর মধ্যে লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। লাহোর ও করাচি থেকে কয়েকজন পিটিআই নেতা–কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়া পাঞ্জাবের চকওয়াল শহরে দলটির প্রায় ৩০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
‘অবৈধভাবে’ সমাবেশ করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এমন হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিল পুলিশ। আজও এক বিবৃতিতে ইসলামাবাদ পুলিশ বলেছে, বেআইনি সমাবেশের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এটাও মাথায় রাখতে হবে যে এমন সমাবেশের আহ্বান জানানোও একটি অপরাধ। রাওয়ালপিন্ডি পুলিশও একই হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
পাকিস্তানে এবারের নির্বাচনের দিন ইন্টারনেট ও মুঠোফোন সেবা বন্ধ রাখা নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনা হয়। ব্যালট ছিনতাইসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তোলেন পিটিআই–সমর্থিত কয়েকজন প্রার্থীও। দলটির দাবি, জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ১৮টি আসনে ভোট কারচুপি করা হয়েছে।
নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে সরাসরি ভোট হওয়া ২৬৬ আসনের মধ্যে একটি আসনে নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। আরেকটি আসনে ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ২৬৪ আসনের মধ্যে ১০১ আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাঁদের মধ্যে ৯৩ জনই ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিত। নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) পেয়েছে ৭৫টি আসন। এরপরই ৫৪টি আসন পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
এবারের নির্বাচনে পিটিআই–সমর্থিত প্রার্থীরা বড় চমক দেখালেও ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে তাঁদের এ অবস্থানে আসতে হয়েছে। ২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই পিটিআইপ্রধান ইমরান খানসহ দলের নেতা–কর্মীদের ওপর চলছে দমন–পীড়ন। তিন মামলায় সাজা পেয়ে ইমরান এখন কারাগারে। আর দলীয় প্রতীক না পেয়ে তাঁর দলের নেতাদের নির্বাচন করতে হয়েছে স্বতন্ত্র হিসেবে।