দুর্নীতির মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড পাওয়া পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাঞ্জাবের অ্যাটক জেলা কারাগারে আছেন। দ্বিতীয় শ্রেণির কয়েদির সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। ওই কারাগারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডন।
গত শনিবার ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাজা ঘোষণা করার পরই ইমরান খানকে লাহোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিনই সন্ধ্যায় তাঁকে পাঠানো হয় অ্যাটক জেলা কারাগারে। ইমরানই পাকিস্তানের প্রথম সাবেক কোনো প্রধানমন্ত্রী, যাঁকে এই ‘কুখ্যাত’ কারাগারে রাখা হয়েছে।
অ্যাটক কারাগারের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তান কারাবিধি ১৯৭৮ অনুযায়ী কারাগারে কয়েদিদের তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। এই তিনটি শ্রেণি হলো উচ্চতর, সাধারণ ও রাজনৈতিক।
ইমরান খান দ্বিতীয় শ্রেণির সুবিধা পাচ্ছেন জানিয়ে ওই কারা কর্মকর্তা বলেন, এর আওতায় তিনি কারাগারে বই পাবেন, নিতে পারবেন পছন্দের একটি পত্রিকাও। এ ছাড়া তাঁর জন্য বরাদ্দ থাকবে একটি টেবিল, একটি চেয়ার, ২১ ইঞ্চির টেলিভিশন, একটি তোশক, জামাকাপড় ও কারাগার থেকে দেওয়া খাবার। তাঁর জন্য বাথরুমও আছে। তবে বাইরে থেকে খাবার দেওয়ার সুযোগ নেই।
দ্বিতীয় শ্রেণির সুবিধা পাওয়া একজন কয়েদি হিসেবে ইমরান খান সপ্তাহে এক দিন তাঁর আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। আরও বাড়তি কিছু সুবিধা তিনি পেতে পারেন। তবে বাড়তি এ সুবিধা পাওয়ার জন্য কারা পরিদর্শকের কাছে আবেদন করতে হবে।
এদিকে ইমরান খানকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তর করার আবেদন জানিয়েছে তাঁর দল পিটিআই। পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে আজ সোমবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টে এ আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে ইমরান খানের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় তাঁকে কারাগারে প্রথম বা ‘এ’ শ্রেণির সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আরজি জানানো হয়েছে।
আবেদনে যুক্তি দেওয়া হয়, ‘শৈশব থেকে সচ্ছলতার মধ্যে বড় হয়েছেন ইমরান খান। পড়াশোনা, শখ, মর্যাদাপূর্ণ সামাজিক–রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে উন্নত জীবনযাপনে অভ্যস্ত তিনি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ইমরান পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন। ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান, শিক্ষা ও উন্নত জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হওয়ার বিষয় বিবেচনায় পাকিস্তান কারাবিধি অনুযায়ী “এ” শ্রেণির সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখেন তিনি।’
কারাগারে ইমরান খানকে প্রথম শ্রেণির সুবিধা দেওয়া দাবিতে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে এ আবেদন করেছেন তাঁর আইনজীবী দলের মুখপাত্র নিয়াম হায়দার পানজোথা। সোমবার আবেদন দাখিল করে তিনি জানান, ‘ কারাগারে ইমরান খানকে ৯৯ বর্গফুটের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে।’
এদিকে ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীদের নিয়মিত সাক্ষাতের সুবিধা দেওয়ার জন্য আদালতে পৃথক একটি আবেদন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই আবেদনে ইমরান খানকে অ্যাটক কারাগারে রাখা ‘অবৈধ’ ঘোষণা করতে আদালতের প্রতি অনুরোধও জানানো হয়।