পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ১০১টি আসনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৪১টি আসনে জয়। তাঁদের বেশির ভাগই কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সমর্থিত। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে এমন হিসাব দেওয়া হয়েছে।
তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ ১০৬টি আসনের হিসাব দিয়েছে। এর মধ্যে ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৪৭টি আসনে জয়ী হয়েছেন।
আইনি প্রতিবন্ধকতার কারণে ইমরানের দল পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। নির্বাচনের আগে দুর্বৃত্তের গুলিতে এক প্রার্থী নিহত হওয়ায় একটি আসনে ভোট স্থগিত করা হয়েছিল আগেই। তাই গতকাল ভোট হয়েছে ২৬৫ আসনে।
ডনের খবরে বলা হয়েছে, কোনো দল এককভাবে সরকার গঠন করতে চাইলে এবার ১৩৪টি আসনে জিততে হবে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, পাকিস্তানে এবার কোনো দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না-ও পেতে পারে।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কারণে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত বিজয়ী কে হবেন, তা নিয়ে বিশ্লেষকেরা এখনো স্পষ্ট করে আভাস দিতে পারছেন না। এমনকি এতটা বিলম্বে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার নজির পাকিস্তানে বিরল। সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বেশ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এর জেরে করাচি স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ও পাকিস্তানের সার্বভৌম বন্ডের দাম পড়েছে।
বিলম্বে ফলাফল ঘোষণা শুরুর বিষয়ে জানতে চাইলে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) বিশেষ সচিব জাফর ইকবাল রয়টার্সকে বলেন, ‘ইন্টারনেট ইস্যুতে’ ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব হয়েছে, তবে বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা দেননি তিনি।
এর আগে গতকাল ভোট গ্রহণের দিনে পাকিস্তানজুড়ে বন্ধ রাখা হয়েছিল মুঠোফোন সেবা। দেশটির অনেক অঞ্চলে ইন্টারনেট বন্ধ থাকা কিংবা গতি কম থাকার খবরও জানা গিয়েছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে এ উদ্যোগ নেয় দেশটির সরকার। তবে আজ শুক্রবার পাকিস্তানে মুঠোফোন সেবা চালু রয়েছে।
বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে থাকা নওয়াজকে সমর্থন দিচ্ছে পাকিস্তানে ক্ষমতাধর হিসেবে পরিচিত সামরিক বাহিনী। পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের ইতিহাসে বেশির ভাগ সময় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সেনা-সমর্থিত সরকার দেশ শাসন করেছে।
গতকাল লাহোরে ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নওয়াজ শরিফ। এ সময় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের বিষয়ে ইঙ্গিত করা হলে তিনি বলেন, ‘জোট সরকারের কথা বলবেন না। একটি সরকারের জন্য নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ... অন্যের ওপর নির্ভর করে থাকা উচিত হবে না।’