ইমরান খানের বাসভবনে তল্লাশি চালাতে পরোয়ানা চেয়েছে পুলিশ

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ইসলামাবাদের বানিগালা বাসভবনে তল্লাশি চালাতে চায় ইসলামাবাদ পুলিশ। এ জন্য পরোয়ানা জারি করতে ‘হাইকমান্ডের’ কাছে আবেদন জানিয়েছে তারা।

আজ শনিবার এক প্রতিবেদনে ডন জানিয়েছে, ইমরান-ঘনিষ্ঠ পিটিআই নেতা শাহবাজ গিলের বিরুদ্ধে করা মামলার সূত্রে এ তল্লাশি অভিযান চালাতে চায় পুলিশ। এদিকে পার্লামেন্টের আবাসনে গিলের জন্য বরাদ্দ করা অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হওয়া স্যাটেলাইট ফোন ও আগ্নেয়াস্ত্র ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

৮ আগস্ট পিটিআই চেয়ারম্যানের বাসভবনে অবস্থান করা নেতাদের এবং তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সাংবাদিকদেরও একটি তালিকা করেছে পুলিশ। তাদের দাবি, এআরওয়াই নিউজের বিকেল চারটার বুলেটিনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের ল্যান্ডফোন সংযোগের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছিলেন গিল।

জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তারা ডনকে বলেন, জিওফেন্সিং প্রযুক্তি ও সেখানে থাকা লোকজনের কল ডেটা রেকর্ডের মাধ্যমে এ তালিকা প্রস্তুত করা হয়। ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে এ মামলায় তাঁদের আসামি করার উদ্দেশ্যে এই তালিকা করা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এ অপরাধ সংঘটনে ইমরান খানের বাসভবন এবং সেখানে থাকা ল্যান্ডফোন সংযোগ ব্যবহার করা হয়েছিল। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে অনুমোদন চেয়ে মামলার সর্বশেষ অগ্রগতির একটি প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়ার পর বাসভবনে তল্লাশি এবং সন্দেহভাজন ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করা হবে।

এদিকে পার্লামেন্টের আবাসনে গিলের জন্য বরাদ্দ করা অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হওয়া স্যাটেলাইট ফোন ও আগ্নেয়াস্ত্র ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছে ডন।

২২ আগস্ট গিলের ওই অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়ে একটি স্যাটেলাইট ফোন ও নাইন–এমএম পিস্তল উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করেছে পুলিশ। তবে গিল বলেছেন, তাঁর অনুপস্থিতিতে কক্ষে অন্য কেউ প্রবেশ করেছে।

যোগাযোগ করা হলে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তারা ডনকে বলেন, স্যাটেলাইট ফোনটিতে থাকা কল লিস্ট, খুদে বার্তা ও অন্যান্য তথ্য উদ্ধার করা হবে। উদ্ধার হওয়া পিস্তল কোনো অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার হয়েছে কি না, তা যাচাই করতে ‘ব্যালিস্টিক ম্যাচিং’ পরীক্ষা করা হবে।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পিটিআই নেতা গিলকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে রিমান্ডে ‘নির্যাতন করায়’ ইসলামাবাদ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) ও উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এবং রিমান্ড মঞ্জুর করা বিচারককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ইমরান খানের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গত রোববার সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়। এ মামলায় তিনি জামিনে আছেন। বিচারককে হুমকি দেওয়ায় তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। এ ছাড়া ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেছে পুলিশ।