পাকিস্তানের এক নারী বিচারক ও জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়ার মামলায় পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা আদালত অজামিনযোগ্য এ পরোয়ানা জারি করেন।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানকে গ্রেপ্তার করতে এবং ২৯ মার্চের আগে আদালতে হাজির করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক রানা মুজাহিদ রহিম। এ ছাড়া আগামী শুনানিতে এই মামলা খারিজ করতে ইমরানের আবেদনের বিষয়ে যুক্তিতর্কও শুনবেন আদালত।
পুলিশি হেফাজতে নিয়ে পিটিআই নেতা শাহবাজ গিলের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে গত বছরের ২০ আগস্ট পাকিস্তান পুলিশের নিন্দা জানান ইমরান খান। একই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, দেশটির পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আকবার নাসির খান, উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক জেবা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করবে তাঁর দল।
ইমরানের বিরুদ্ধে আগে থেকেই একাধিক আইনে মামলা রয়েছে। ইসলামাবাদ হাইকোর্টও তাঁর বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ এনেছিলেন। পরে ইমরানের ক্ষমা চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁকে ক্ষমা করে দেন। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। এরপর সম্প্রতি ইমরানের বিরুদ্ধে নারী বিচারককে হুমকি দেওয়ার মামলা করা হয়েছে।
হুমকির ওই মামলা শুনানি চলছিল আজ। শুনানিতে ইমরান সশরীর হাজির হবেন না—এ অনুমতি দিতে আবেদন করেছিল তাঁর দল পিটিআই। তবে বিচারক রানা মুজাহিদ রহিম আবেদন খারিজ করে বলেন, আজকের মধ্যে ইমরান আদালতে হাজির না হলে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে।
বিচারকের এই শুনানি অনুসারে, আদালতে হাজির না হওয়ায় ইমরানের বিরুদ্ধে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো।
এর আগে ইমরানের বিরুদ্ধে অজামিনযোগ্য অপর একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ১০ মার্চ স্থগিত করেছেন বেলুচিস্তান হাইকোর্ট। আগের দিন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাশির আহমেদ কোয়েটার একটি থানায় হওয়া মামলায় ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তিনি ইমরানকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতেও যায়।
এর আগে তোশাখানা মামলায় ৫ মার্চ ইমরান খানকে তাঁর লাহোরের বাসা থেকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে পুলিশ। তবে তারা সেখানে ইমরানকে পায়নি। পরদিন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেন, যে দল (পুলিশ) খানকে (ইমরান) গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল, তাদের অনেক নাটকীয়তার মুখোমুখি হতে হয়েছে। গুঞ্জন উঠেছে, তিনি লাফিয়ে তাঁর প্রতিবেশীর বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন।