পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানের ডাকে তাঁর দল আজ রোববার দেশজুড়ে শক্তি দেখাবে।
গত বছরের ৯ মের পর আজই প্রথম পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীরা রাজপথে বড় ধরনের শক্তি দেখাতে যাচ্ছেন।
পাকিস্তানে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন সামনে রেখে পিটিআই আজকের কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে। এতে আসন্ন নির্বাচনে পিটিআইয়ের টিকিটধারী প্রার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা অংশ নেবেন।
দলটির কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক রওফ হাসান ডনের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, তাঁরা দলীয় টিকিটধারীদের আজ বেলা দুইটায় রাজপথে নামতে বলেছেন। প্রার্থীদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় সভা-সমাবেশ করতে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁরা ভোটারদের সামনে বক্তব্য তুলে ধরবেন। ভোটারদের তাঁরা একটি বার্তা দেবেন। বার্তাটি হলো, পিটিআই কাউকে তার স্থান দখল করতে দেবে না।
একই সঙ্গে পিটিআই আজ ১৫৮ পৃষ্ঠার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবে। ইশতেহারে পাকিস্তানের সব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু থাকবে। দলটির নেতা ফিরদৌস শামীম নকভি এক ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে পিটিআইয়ের প্রার্থীদের এ কথা জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত সপ্তাহের শুরুতে আজ সারা দেশে পিটিআইয়ের টিকিটধারী প্রত্যেক প্রার্থীকে রাজপথে নেমে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ইমরান খান তখন সতর্ক করে বলেছিলেন, পিটিআইয়ের যেসব প্রার্থী সমাবেশ করবেন না, তাঁদের দলীয় মনোনয়ন বাতিল করা হবে।
পরে ইমরান খানের বোনও বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি গণমাধ্যমের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থী ও কর্মীদের কাছে এ বিষয়ে পিটিআইয়ের বার্তা পৌঁছে দেন।
পিটিআইয়ের এমন ঘোষণা দলটির বেশ কিছু প্রার্থীর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে। কারণ, গ্রেপ্তার এড়াতে দলটির বেশ কিছু প্রার্থী আত্মগোপনে আছেন। আজ কর্মসূচি পালন করতে প্রকাশ্যে এলে গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন।
তবে পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক হাসান বলেছেন, গ্রেপ্তারের ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সারা দেশে সভা-সমাবেশ করার জন্য সব নেতাকে দলের পক্ষ থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে।
হাসান বলেন, কর্মসূচি পালনকালে পিটিআইয়ের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে। কিন্তু তাঁরা বিশ্বাস করেন, পিটিআইয়ের কোনো প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হলে তা তাঁদের নির্বাচনী প্রচারে প্রভাব ফেলবে না। বরং তাঁরা ভোটারদের সহানুভূতি পাবেন। এতে তাঁদের ভোট আরও বাড়তে পারে। কারণ, পিটিআইয়ের সঙ্গে কী ঘটছে, তা ভোটাররা দেখবেন। তাঁরা এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন।
গত ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে গ্রেপ্তারের জেরে পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীরা সারা দেশে বিক্ষোভ করেন। এই বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়। সহিংস বিক্ষোভের জেরে পিটিআইয়ের হাজারো নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হন।
ইমরান খান বর্তমানে কারাগারে। দুর্নীতির মামলায় সাজার জেরে আইনগত কারণে তিনি আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। তাঁর দলও নানামুখী প্রতিবন্ধকতার মুখে আছে।