নিজের গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ‘অপহরণ’ বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেছেন, এর পেছনে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের হাত রয়েছে। এ কারণে সেনাপ্রধানের তীব্র সমালোচনা করেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান।
গতকাল শুক্রবার জামিন পেয়েছেন ইমরান খান। আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট তাঁকে দুই সপ্তাহের জামিন দেন। পাশাপাশি আগামী সোমবার পর্যন্ত তাঁকে কোনো মামলাতেই গ্রেপ্তার না করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জামিন পাওয়ার পর আদালতকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে অল্প সময় কথা বলেন ইমরান খান। তিনি সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ জানান। বিবিসির সাংবাদিককে ইমরান খান বলেন, ‘এর (গ্রেপ্তার) পেছনে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো নয়, বরং একজন ব্যক্তি জড়িত। তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান। সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো গণতন্ত্র নেই। যা ঘটেছে, তাতে সেনাবাহিনী অপমানিত হয়েছে।’
ইমরান খান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ক্ষমতায় ফেরা নিয়ে তিনি (সেনাপ্রধান আসিম মুনির) উদ্বেগে রয়েছেন। তিনি ভাবছেন, আমি ক্ষমতায় ফিরলে তিনি তাঁর ক্ষমতা হারাবেন। আমি এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেব না।’
সেনাপ্রধানের এ ভয় থেকেই পুরো দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, বলেছেন ইমরান খান।
ইমরান খানের অভিযোগ, তাঁর দল পিটিআইয়ের সদস্যরা বর্তমান সরকারের প্রতিহিংসার শিকার। এ জন্য গত ১ বছরে ৫ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে দুই দফা হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তোলা হয়েছিল। কিন্তু আমলে নেয়নি সরকার।
ইসলামাবাদ হাইকোর্টে প্রবেশের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর গতকাল রাতে পুলিশের সহায়তায় আদালত প্রাঙ্গণ ছেড়ে বেরিয়ে যান ইমরান খান। ইসলামাবাদ থেকে নিজ বাড়ি লাহোরের পথে রওনা দেন তিনি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সব মামলায় জামিন না পেলে আবারও গ্রেপ্তার হতে পারেন ইমরান খান।
ইমরানের গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ঘিরে পাকিস্তানজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে অস্থিতিশীলতা, সংঘাত। দেশটিতে বিক্ষোভে প্রাণ গেছে ৯ জনের। সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের পক্ষ থেকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদিও গত রাতে ইমরান আদালত প্রাঙ্গণ ছেড়ে যাওয়ার পর ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিক্ষোভকারীদের প্রতি সরকারের কঠোর পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে।