ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দেশটির পার্লামেন্টে সংরক্ষিত ২৩টি আসন পাওয়ার যোগ্য বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আজ শুক্রবার এক আদেশে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত এ ঘোষণা দেন। এতে দেশটির দুর্বল জোট সরকার আরও চাপে পড়ল।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের পার্লামেন্টের জাতীয় পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় প্রতীক না পাওয়ায় ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন পিটিআই নেতারা। তাঁরা পার্লামেন্টে সবচেয়ে বেশি আসনে জয় পেলেও নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দেয়, সংরক্ষিত ৭০টি আসনের ভাগ পাবেন না তাঁরা।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের ভাষ্য ছিল, সংরক্ষিত আসনগুলো শুধু রাজনৈতিক দলের জন্য নির্ধারিত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পার্লামেন্টের এ আসনগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে বেশির ভাগ আসন পেয়েছিল পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন জোট সরকারের দলগুলো।
আজ সুপ্রিম কোর্টের ওই আদেশ পড়ে শোনানোর সময় প্রধান বিচারপতি কাজী ফায়েজ ঈসা বলেন, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে পিটিআই সংরক্ষিত আসন পাওয়ার যোগ্য। এই আদেশের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন আদালতের ১৩ সদস্যের বেঞ্চের আটজন বিচারক। বিপক্ষে ছিলেন পাঁচজন।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে আসনসংখ্যা ৩৩৬টি। নির্বাচন আইন অনুযায়ী এর মধ্যে ৬০টি নারী ও ১০টি মুসলিম নন এমন সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত। যদিও পিটিআই ২৩টি সংরক্ষিত আসন পাওয়ায় পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের জোট সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতায় কোনো পরিবর্তন আসবে না। তবে পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পিটিআইকে এগিয়ে দেবে।
পাকিস্তানের সর্বশেষ নির্বাচনের পর পিটিআইয়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের অভিযোগ ছিল নির্বাচন ঘিরে কারচুপি করেছে নির্বাচন কমিশন ও সেনাপন্থী তত্ত্বাবধায়ক সরকর। বিষয়টি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। তবে এমন অভিযোগ বরাবরই নাকচ করা হয়েছে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আজকের আদেশের পর বেশ উচ্ছ্বসিত ইমরান খানের সমর্থকেরা। আদেশ ঘোষণার পরপরই পাকিস্তানের ‘সংবিধান লঙ্ঘনের’ অভিযোগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার পদত্যাগ দাবি করেছে পিটিআই। দলটির নেতারাও আদালতের এ আদেশের প্রতি অভিবাদন জানিয়েছেন।
পিটিআই নেতা ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী তৈমুর খান ঝাগরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘আমরা ইতিহাসের সঠিক দিকে রয়েছি। এটা কঠিন কাজ। তবে আমাদের লড়াই চলবে।’