পাকিস্তানের বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) নির্বাচন–পূর্ব জালিয়াতির শিকার। কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলকে পদ্ধতিগতভাবে নির্বাচন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এমন অভিযোগ তুলেছে পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন। একই সঙ্গে পাকিস্তানের আসন্ন জাতীয় পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছে সংস্থাটি।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। পিটিআই জানিয়েছে, দলটির প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানসহ তাদের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। দলটির আরও অভিযোগ, পিটিআইকে নির্বাচনের বাইরে রাখার ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে।
পাকিস্তান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (এইচআরসিপি) কর্মকর্তা ফরহাতুল্লাহ বাবর বলেন, মনোনয়নপত্র বাতিলের ধরনেই স্পষ্ট যে এটা পদ্ধতিগত অর্থাৎ পূর্বপরিকল্পিত।
ফরহাতুল্লাহ বাবর বলেন, যেভাবে একের পর এক (পিটিআই প্রার্থীদের) মনোনয়নপত্র বাতিল করা হচ্ছে, তা নির্লজ্জের মতো। মনোনয়নপত্র বাতিলের পেছনে যেসব কারণ দেখানো হচ্ছে, সেগুলোও খুবই তুচ্ছ। আর নির্বাচন–পূর্ব জালিয়াতি যে চলছে, তা নিয়ে সন্দিহান হওয়ার কোনো অবস্থা নেই।
ইমরান খান (৭১) গত আগস্ট থেকে কারাবন্দী। দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহসহ একাধিক মামলায় তাঁর বিচার চলছে। ইমরান খানের অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে এসব মামলা ষড়যন্ত্রমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আসন্ন নির্বাচনে তিনি ও তাঁর দল যাতে অংশ নিতে না পারে, তার ষড়যন্ত্র চলছে।
গত বছর রাষ্ট্রীয় উপহারসামগ্রী বিক্রির (তোশাখানা) মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন ইমরান খান। এ কারণে নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরের জন্য তাঁকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে। তবে মানবাধিকার কমিশন বলছে, পিটিআইয়ের যাঁরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাচ্ছেন, তাঁদের হয়রানি করা হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনে পিটিআইয়ের সম্ভাব্য প্রার্থীদের হেনস্তা করার প্রমাণও রয়েছে তাদের কাছে।
নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে মানবাধিকার কমিশনের ফরহাতুল্লাহ বাবর আরও বলেন, নির্বাচনের পর এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে জনমনে বড় ধরনের প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া এমন নির্বাচনে নতুন সরকার গঠিত হলে সেই সরকারকে বৈধ সরকার হিসেবে মেনে নেবেন না জনগণ।
অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান ফরহাতুল্লাহ বাবর। এ ছাড়া তিনি সতর্ক করে বলেন, নির্বাচনের পর এ অবস্থা তৈরি হলে বিদ্যমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও অচলাবস্থার আরও অবনতি ঘটবে।একই সঙ্গে এতে করে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে।