চলমান বন্যা পরিস্থিতিকে পাকিস্তানের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এদিকে গতকাল এক ভিডিও বার্তায় বন্যাদুর্গত পাকিস্তানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ১৬ কোটি ডলার সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। খবর জিও নিউজের।
রেকর্ড বৃষ্টিপাতের পর গত জুন মাস থেকে বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে আছে পাকিস্তান। কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশটিতে বন্যায় ১ হাজার ১০০–এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। দেশটির ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন অবকাঠামো এবং ফসল।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বন্যা পরিস্থিতিতে সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসনপ্রচেষ্টা নিয়ে কথা বলেন শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামোগুলো সংস্কার এবং ভুক্তভোগীদের সহায়তার জন্য কমপক্ষে এক হাজার কোটি ডলার পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন। এর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি গভীরভাবে প্রতিজ্ঞা করছি, খুব স্বচ্ছভাবে প্রতিটি পয়সা খরচ করা হবে। প্রতিটি পয়সা অসহায়দের কাছে পৌঁছানো হবে।’
গতকাল জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘পাকিস্তান দুর্ভোগের মধ্যে ডুবে আছে।’ পাকিস্তানের জন্য ১৬ কোটি ডলার সহায়তার আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, এ অর্থ দিয়ে ৫২ লাখ বন্যার্ত মানুষকে খাদ্য, পানি, স্যানিটেশন, জরুরি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসুবিধা দেওয়া যাবে।
জরুরি ভিত্তিতে সহায়তার জন্য পাকিস্তান যে আবেদন জানিয়েছে, তাতে সাড়া দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আসুন, পাকিস্তানের জনগণের প্রয়োজনের সময় তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সংহতি জানানোর মতো সব পদক্ষেপ নিই। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের বিশ্ব যেভাবে ধ্বংস হচ্ছে, তার দিকে চোখ বুজে না থাকি আমরা।’
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে অতিরিক্ত তিন কোটি ডলার সহায়তা পাঠানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গতকাল উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, মেহার বাইপাস এলাকায় সিন্ধু হাইওয়ের কাছে ৪০ জনের বেশি যাত্রীবাহী একটি বাস উল্টে গেছে। তিন যাত্রী বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। অন্যদের উদ্ধার করা হয়েছে। যাত্রীবাহী বাসটি লারকানার দিকে যাচ্ছিল।