পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আল–কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আজ সোমবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারিত ছিল। তবে ইসলামাবাদের জবাবদিহি আদালত (অ্যাকাউন্টেবিলিটি কোর্ট) রায় ঘোষণা স্থগিত করেছেন।
আজ আদালতে বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা বলেন, ‘আজ রায় ঘোষণা করা হবে না। ছুটি (আদালতে) শুরু হচ্ছে এবং হাইকোর্টে একটি কার্যধারাও আছে।’
বিচারপতি আরও বলেন, শিগগিরই রায় ঘোষণার জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
আনুষ্ঠানিকভাবে আগামীকাল (২৪ ডিসেম্বর) থেকে আদালতে শীতকালীন ছুটি শুরু হচ্ছে। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এ ছুটি চলবে।
রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান বর্তমানে দেশটির রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী। ১৯ কোটি পাউন্ড তছরুপের অভিযোগে তাঁর ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি করেছিল পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। এ মামলায় গত বছরের মে মাসে ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সাধারণ নির্বাচনের পরপরই গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির এই মামলায় ইমরান ও বুশরাকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইমরান ও বুশরা বিবি বাহরিয়া টাউন লিমিটেডের কাছ থেকে কোটি কোটি রুপি অর্থ এবং অনেক জমি নিয়েছিলেন। ইমরানের নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী পিটিআই সরকারের সময় যুক্তরাজ্য পাকিস্তানকে যে পাঁচ হাজার কোটি রুপি পরিমাণ অর্থ ফেরত দিয়েছিল, তা বৈধ করতে এসব লেনদেন হয়েছে।
ডিসেম্বরে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) ইমরান, তাঁর স্ত্রী বুশরাসহ আটজনের বিরুদ্ধে আল–কাদির বিশ্ববিদ্যালয়সংক্রান্ত দুর্নীতির একটি অভিযোগ আনে।
এনএবির জমা দেওয়া রেফারেন্সে অভিযোগ করা হয়, বর্তমানে কারাগারে থাকা ইমরান করাচির বাহরিয়া টাউন কোম্পানির মালিকানাধীন জমি বেচাকেনার কাজে ব্যবহৃত একটি অ্যাকাউন্টে অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তরে ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ রেখেছেন।
এনএবি আরও দাবি করেছে, নিজস্ব কর্মকাণ্ডের ন্যায্যতা প্রমাণ এবং তথ্য প্রদানের একাধিক সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও অভিযুক্ত ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এক বা একাধিক অজুহাতে তথ্য দিতে অস্বীকার করেছিলেন।
এই মামলায় অন্য সন্দেহভাজনদের মধ্যে আছেন আবাসন ব্যবসায়ী মালিক রিয়াজ হুসেন ও তাঁর ছেলে আহমেদ আলি রিয়াজ, মির্জা শেহজাদ আকবর এবং জুলফি বুখারি। তবে তদন্ত ও আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ায় যোগ না দিয়ে তাঁরা পলাতক থাকেন। পরে তাঁদের স্বীকৃত অপরাধী বলে ঘোষণা করা হয়।
ইমরানের স্ত্রী বুশরার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ফারহাত শাহজাদী এবং পিটিআই সরকারের অ্যাসেটস রিকভারি ইউনিটের আইনবিশেষজ্ঞ জিয়াউল মুস্তফা নাসিমকেও স্বীকৃত অপরাধী ঘোষণা করা হয়েছে।
এই ছয় অভিযুক্তের প্রত্যেকের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।