পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের ‘রেড জোন’ থেকে গতকাল মঙ্গলবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা-কর্মীদের হটিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রেড জোনে ঢুকে পড়া পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেশটির খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর ছিলেন। ছিলেন পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি।
রেড জোনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের মুখে বিক্ষোভস্থল থেকে সরে যান বুশরা ও গান্দাপুর। মূলত এর পর থেকেই দুজনের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
বুশরা ‘অপহরণের’ শিকার হয়ে থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করেছেন তাঁর বোন মরিয়ম রিয়াজ।
মরিয়ম আজ বুধবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, বুশরা অপহরণের শিকার হয়ে থাকতে পারেন। পিটিআইয়ের বিক্ষোভকারীদের গাড়িবহর লক্ষ্য করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি ছোড়ার পর থেকে তাঁর কোনো খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার।
মরিয়ম আরও বলেন, বুশরা যদি খাইবার পাখতুনখাওয়ায় যেতেন, তাহলে তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।
তা ছাড়া বুশরার গ্রেপ্তার হওয়া বা খাইবার পাখতুনখাওয়ায় যাওয়ার বিষয়ে পরস্পরবিরোধী খবর পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান মরিয়ম।
মরিয়ম বলেন, পিটিআইয়ের কর্মসূচি ব্যাপক সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে। বুশরা কখনোই ইমরান খানকে ত্যাগ করবেন না। কিংবা এমন পরিস্থিতিতে তিনি পালিয়েও যাবেন না।
তবে পিটিআইয়ের তথ্যবিষয়ক সম্পাদক শেখ ওয়াকাস আকরাম বলেন, বুশরা ও গান্দাপুর নিরাপদে আছেন।
একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এমন কথা বলেন আকরাম। তবে সূত্রের বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি পিটিআইয়ের এই নেতা।
এর আগে গান্দাপুরের পরিবারের বরাত দিয়ে একটি সূত্র বলেছিল, তিনি ও বুশরা নিরাপদে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে পৌঁছেছেন।
কারাবন্দী ইমরানের মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ ও সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী বাতিলের দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদের ‘ডি-চকে’ বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল পিটিআই।
পিটিআইয়ের বিক্ষোভ ঠেকাতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয় সরকার। সমাবেশস্থলে যাওয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে পিটিআই নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানীতে সেনা মোতায়েন করা হয়।
পিটিআই আজ ভোরে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেল আজ একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলে, সরকারের বর্বরতা এবং নিরস্ত্র নাগরিকদের জন্য রাজধানীকে কসাইখানায় পরিণত করার পরিকল্পনার কথা মাথায় রেখে তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দিচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের নির্দেশনার ভিত্তিতে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।