পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে গত বছর বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ২৫ ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন দেশটির সামরিক আদালত। আজ শনিবার দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানায়। এ মামলায় অধিকাংশ ব্যক্তির ১০ বছরের বেশি কারাদণ্ড হয়েছে।
গত ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হন। তবে তিনি এর পেছনে দেশটির ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। এরপর গত বছরের মে মাসে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তোলা হয়। ইমরান খানকে গ্রেপ্তারে গত বছর ৯ মে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে সামরিক স্থাপনায় ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়। এরপর দেশটির সামরিক আদালতে বেসামরিক ব্যক্তিদের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ পদক্ষেপকে ভয় দেখানোর কৌশল বলে মন্তব্য করেছে। তাদের ভাষ্য, ভিন্নমত দমনের জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক আদালতে এ ধরনের বিচার অস্বচ্ছ। তবে কয়েক মাস গোপনীয়তার পরে সামরিক জনসংযোগ শাখা ২৫ জনের বিচারের কথা জানিয়েছে। অভিযুক্ত প্রত্যেকেই পুরুষ। তাঁদের মধ্যে ১৪ জনকে ১০ বছরের বেশি কঠোর সাজা ও ১১ জনকে এর চেয়ে কম মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়েছে।
দোষী সাব্যস্ত সবাই পুরুষ এবং ১৪ জনকে এক দশকের ‘কঠোর কারাদণ্ড’ দেওয়া হয়েছে, বাকি ১১ জনকে কম কারাদণ্ডের জন্য সেট করা হয়েছে।
তবে সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে তাঁদের অপরাধের বিষয়ে স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। কেবল অপরাধ সংগঠিত হওয়ার সময় তাঁদের অবস্থানের তালিকা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের মে মাসে অস্থিরতার সময় পাকিস্তানে একাধিক স্থানে রাজনৈতিকভাবে উসকানিমূলক সহিংসতা এবং অগ্নিসংযোগের দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছিল।
বুশরা বিবির জামিন
পিটিআইয়ের গত ২৬ নভেম্বরের বিক্ষোভসংক্রান্ত ঘটনায় ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে রাওয়ালপিন্ডি, অ্যাটক ও চাকওয়ালে ৩২টি মামলা হয়েছিল। বুশরা বিবি সব কটি মামলায় গতকাল জামিন পেয়েছে। রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে হাজির হয়ে গতকাল জামিন চান তিনি। আদালত ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সব কটি মামলায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। এতে আইনি জটিলতা থেকে তিনি সাময়িক স্বস্তি পেলেন।