বেলুচিস্তান স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স গত বৃহস্পতিবার বড় ধরনের বিক্ষোভ করেছে। মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষার ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে তাঁরা এ বিক্ষোভ শুরু করেন। কোয়েটা প্রেসক্লাবের সামনে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। এসব প্ল্যাকার্ডে তাঁদের দাবির বিষয়গুলো তুলে ধরেন তাঁরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভর্তি পরীক্ষার ফি বৃদ্ধি করায় দরিদ্র শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারছেন না।
শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সরকারের দাবির সমালোচনা করার পাশাপাশি শিক্ষাকে আরও সহজলভ্য করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা পিডিএমসির অন্যায় নীতি প্রত্যাখ্যান ও নিবন্ধন ফি কমানোর দাবি জানান।
এদিকে সম্প্রতি পাকিস্তানজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারে বিঘ্নের মুখে পড়েছেন ব্যবহারকারীরা। কোথাও ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে। কোথাও খোলা থাকলেও গতি বেশ কম। বিষয়টি নিয়ে ইন্টারনেট–সংযোগ সরবরাহকারীরা কিছুই বলতে পারছে না। মুখে কুলুপ এঁটেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথরিটি (পিটিএ)।
গত ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে–পরে এক্স (সাবেক টুইটার) বন্ধ করে দিয়েছিল পাকিস্তান সরকার। জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি বিবেচনায় এটা করা হয়। গত বুধবার ব্যবহারকারীরা অনেক ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারেননি। এসব ওয়েবসাইটে ঢুকতে ভিপিএন ব্যবহার করতে হয়।
ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বেলুচিস্তানে সরকারবিরোধী বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন বেলুচিস্তান প্রদেশে চীন-সমর্থিত বিমানবন্দর প্রকল্পের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক গণবিক্ষোভ স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষকে তুলে ধরেছে।
পাকিস্তানের অশান্ত বেলুচিস্তান প্রদেশের বন্দর শহর গোয়াদরে চীনের সহায়তায় তৈরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এর মধ্যেই এ প্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগত বেলুচরা তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের অন্যায্য শোষণের জন্য পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে।
বেলুচ ইয়াকজেহতি কমিটি (বিওয়াইসি) বেলুচদের রাজনৈতিক এবং আর্থসামাজিক অধিকার নিয়ে কাজ করে। বেলুচিস্তানজুড়ে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বিওয়াইসি।
বিওয়াইসি নেতা মাহরাং বালুচ বলেন, বেলুচ গণহত্যার বিরুদ্ধে তাঁরা আন্দোলন করছেন। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাজার হাজার জোরপূর্বক গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনেন তিনি। মাহরাং অভিযোগ করেন, ‘বেলুচিস্তানে বিনিয়োগকারী চীন বা অন্য কোনো দেশ সরাসরি বেলুচ গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। মাকরান উপকূলীয় অঞ্চলে জোরপূর্বক গুম ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ঘটানো হচ্ছে। তারা স্থানীয় বেলুচদের কোনো লাভ ছাড়াই আমাদের সম্পদ লুটপাট করছে।’