বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। খবর বিবিসির।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সালমান সুফি বিবিসিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্য দেশগুলো সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। তবে আরও তহবিল প্রয়োজন।
সালমান সুফি আরও বলেন, গত জুন মাস থেকে এক হাজারের বেশি লোকের প্রাণহানি হয়েছে। কয়েক লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান সরকার বন্যার্তদের সহযোগিতা করতে সবকিছু করার চেষ্টা করছেন। গৃহহীন মানুষ সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছে।
পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে নদী প্লাবিত হয়েছে। বন্যার কারণে কয়েক হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
জুনায়েদ খান (২৩) এএফপিকে বলেন, ‘আমরা বছরের পর বছর কঠোর পরিশ্রম করে যে বাড়িটি বানিয়েছি, তা আমাদের চোখের সামনে ডুবে যাচ্ছে। আমরা রাস্তার ধারে বসে আছি আর আমাদের স্বপ্ন ডুবে যেতে দেখছি।’
সিন্ধু প্রদেশও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সুফি বিবিসিকে বলেন, পাকিস্তানে জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, পাকিস্তান এমনিতেই অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত। কিন্তু দেশটি যখন অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠছে, তখনই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, তা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বন্যাকবলিত মানুষ বলছেন, এযাবৎকালে তাঁরা সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছেন। পাকিস্তানে বন্যা খুব বেশি হয় না। দেশটিতে খুব বেশি বৃষ্টিও হয় না। লারকানা শহরের কাছে কয়েক হাজার কাচা ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
একেক গ্রামে বন্যার্তদের চাহিদা একেক রকম বলে জানিয়েছে পাকিস্তান সরকার। একটি গ্রামে মানুষের কাছে খাবার নেই। আরেকটি গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য আছে। তবে অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে তাঁদের টাকা প্রয়োজন।
একটি গ্রামে শিশুরা পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে ভুগছে। অন্য একটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ১২ বছরের একটি মেয়ে ও তার ছোট বোন সারা দিন কিছু খায়নি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, দেশটিতে ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত। তিনি বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ বন্যাকবলিত। ২০১০-১১ সালের বন্যার সঙ্গে এ বন্যার তুলনা করা যায়। সরকারি কর্মকর্তারা বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
তবে বন্যায় এত ক্ষয়ক্ষতির কারণ হিসেবে স্থানীয় প্রশাসনের অব্যবস্থাপনাকেও দায়ী করছে অনেকে।