পারভেজ মোশাররফ
পারভেজ মোশাররফ

পাকিস্তানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মোশাররফের মৃত্যুর দণ্ডাদেশ বহাল

পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল (অব.) পারভেজ মোশাররফ ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মারা গেছেন। ২০১৯ সালে রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। বিশেষ আদালতের দেওয়া সেই মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। আজ বুধবার পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) কাজী ফয়েজ ইসার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ শুনানি নিয়ে ওই আদেশ বহাল রাখেন।

২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর একটি বিশেষ আদালত সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। ২০০৭ সালের নভেম্বরে জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) আমলে মামলা হয়। এর বিরুদ্ধে আপিল করেন পারভেজ মোশাররফ। ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি লাহোর হাইকোর্ট বিশেষ আদালতের রায়কে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়ে মামলার শুনানির আদেশ দেন। লাহোর হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেন পাকিস্তান বার কাউন্সিল ও তওফিক আসিফসহ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা। আজ সর্বোচ্চ আদালত এই মামলার মুলতবি রায় দেন।

সাবেক প্রেসিডেন্টের আপিল বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, একাধিক নোটিশ সত্ত্বেও পারভেজ মোশাররফের উত্তরাধিকারীরা মামলাটির খোঁজখবর করেননি। মোশাররফের আইনজীবী সালমান সাফদার বলেন, তিনি মোশাররফের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কারও সাড়া পাননি। সুপ্রিম কোর্ট লাহোর হাইকোর্টের রায়কে অকার্যকর ঘোষণা করে বলেন, ওই রায় আইন অনুযায়ী হয়নি।

এর আগে এ মামলার শুনানি হয়েছিল ২০২৩ সালের নভেম্বরে। আদালত ওই সময় বলেন, ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর মোশাররফ মার্শাল ল জারি করেছিলেন। তাকে বৈধতা দেওয়া সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে।

প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘আমাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সংবিধান বাতিলের জন্য কাউকে শাস্তি না দিলেও অন্তত একজনকে স্বীকার করা উচিত যে অতীতে যা করা হয়েছিল, তা ভুল ছিল।’

রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সফদার বলেন, চার বছর ধরে আদালতে বিচারাধীন থাকলেও আজ চতুর্থবারের মতো মোশাররফের আপিলের শুনানি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে কোনো ফৌজদারি মামলা চালানো যায় না এবং তাঁর অনুপস্থিতিতে মোশাররফের মামলার শুনানি হয়েছে।

মোশাররফের আইনজীবী বলেন, ‘আজ যদি মোশাররফ বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনি মামলাটি চালাতেন। যখন তিনি জীবিত ছিলেন, তখন তাঁর আবেদনের শুনানি হয়নি।’