পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার ১০ ঘণ্টা পরও ফলাফল সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু জানা না যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, পাকিস্তানের অতীতের নির্বাচনগুলো বিবেচনায় নিলে এবার ফল ঘোষণায় এমন বিলম্ব অস্বাভাবিক।
গভীর রাজনৈতিক বিভাজন, অর্থনৈতিক সংকট ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়।
অতীতের নির্বাচনে দেখা গেছে, ভোটের দিন মধ্য রাতের মধ্যে ফল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। রাত ফুরানোর আগেই বোঝা যায় কোন দল বিজয়ী। তবে এবারে চিত্রটা ভিন্ন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোয় ভোটের ফল আসছে খুব ধীরগতিতে।
স্থানীয় টেলিভিশনগুলোয় দেখা যাচ্ছে, এবার জাতীয় পরিষদের যে ২৬৫ আসনে ভোট হয়েছে, ভোট গ্রহণের ৭ ঘণ্টা পারও সেগুলোর মাত্র ২০ শতাংশ ভোট গণনা হয়েছে।
ভোটের ফল ঘোষণায় কেন এমন বিলম্ব হচ্ছে জানতে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে তাতে কোনো সাড়া দেয়নি ইসিপি।
ধারণা করা হচ্ছে, গত নির্বাচনে জয়ী দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) ও বর্তমানে কারাগারে থাকা পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান–সমর্থিত প্রার্থীদের সঙ্গে আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ–নওয়াজের (পিএমএল–এ) মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে থাকা নওয়াজ শরিফকে সমর্থন দিচ্ছে দেশটিতে ক্ষমতাধর হিসেবে পরিচিত সামরিক বাহিনী।
পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। নির্বাচনের আগে দুর্বৃত্তের গুলিতে এক প্রার্থী নিহত হওয়ায় একটি আসনে ভোট স্থগিত করা হয়েছিল আগেই। তাই গতকাল ভোট হয়েছে ২৬৫ আসনে।
কোনো দল এককভাবে সরকার গঠন করতে চাইলে এবার ১৩৩টি আসনে জিততে হবে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এবার কোনো দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বলে ধারণা করছেন তাঁরা।
অতীতের নির্বাচনের আলোকে ধারণা করা হচ্ছিল, স্থানীয় সময় গতকাল বিকেল ৫টায় ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক ফল আসতে শুরু করবে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোয়। কিন্তু ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর ১০ ঘণ্টা ধরে ভোট গণনা শেষেও কে জয়ী হচ্ছে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না।
ধারণা করা হচ্ছে, রাতভর ভোট গণনার পর আজ শুক্রবার সকালের মধ্যে নির্বাচনের ফল সম্পর্কে স্পষ্ট একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
তবে ইমরান খানের দল পিটিআই অভিযোগ করেছে, পিটিআই–সমর্থিত প্রার্থীদের জয়ী হতে দেখে নির্বাচনের ফল ঘোষণায় বিলম্ব করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনের যে পর্দায় ফল প্রদর্শিত হচ্ছিল, সেই পর্দা বন্ধ করে দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন দলটির কোনো কোনো নেতা। পিটিআই বলেছে, ‘ষড়যন্ত্র’ করে জনগণের রায় বদলে ফেলার অপচেষ্টার পরিণাম ভালো হবে না।