চার মাস ধরে নিখোঁজ পাকিস্তানের টেলিভিশন সাংবাদিক ইমরান রিয়াজ খান ঘরে ফিরেছেন। পাঞ্জাবের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) উসমান আনোয়ার সোমবার ডনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শিয়ালকোট জেলা পুলিশ কর্মকর্তা হাসান ইকবাল ও রিয়াজের আইনজীবী মিয়ান আল আশফারও এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডনের খবরে বলা হয়, গত ৯ মে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার দুই দিন পর ইউটিউবার ও টেলিভিশন উপস্থাপক ইমরান রিয়াজকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁকে ক্যান্ট পুলিশ স্টেশন, পরে সেখান থেকে শিয়ালকোট কারাগারে নেওয়া হয়।
এদিকে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, ওমান যাওয়ার পথে রিয়াজকে শিয়ালকোট বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইউটিউবে তাঁর ৩০ লাখের বেশি ফলোয়ার রয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের চার দিন পর পুলিশ লাহোর হাইকোর্টকে জানায়, গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই সাংবাদিককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর কোনো হদিস মিলছিল না। পুলিশও বলছিল, রিয়াজ তাদের জিম্মায় নেই।
রিয়াজের নিখোঁজ হওয়ার দায় কেউই নিচ্ছিল না। তবে অনেকেই ধারণা করে, দেশটির ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন নিরাপত্তা সংস্থার লোকজনই তাঁকে তুলে নিয়ে গেছেন।
রিয়াজের পরিবার তাঁকে খুঁজে পেতে লাহোর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। বেশ কয়েক দফা শুনানির পর ২০ সেপ্টেম্বর লাহোর হাইকোর্ট ইমরান রিয়াজকে খুঁজে বের করতে পাঞ্জাব পুলিশকে ‘শেষ সুযোগ’ হিসেবে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেন। শুনানিকালে লাহোর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ আমির ভাটি বলেছিলেন, তাঁর ধৈর্য ‘শেষ হয়ে আসছে’।
ডনের খবরে বলা হয়, সোমবার সকালে শিয়ালকোট পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট দেয়। সেখানে লেখা হয়, ‘সাংবাদিক/উপস্থাপক ইমরান রিয়াজ খানকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন তিনি পরিবারের সঙ্গে আছেন।’
রিয়াজের আইনজীবী আশফাক এক্সে পোস্ট দিয়ে লেখেন, ‘আল্লাহর বিশেষ রহমতে আমি আমার রাজপুত্রকে ফিরিয়ে এনেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সমস্যার পাহাড়, দুর্বল বিচারব্যবস্থা, বর্তমান অকার্যকর সংবিধান এবং আইনি অসহায়ত্বের কারণে অনেক সময় লেগে গেল।’
সাংবাদিক ওজাহাত এস খান বলেন, তিনি রিয়াজের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা বলেছে, রিয়াজ শারীরিকভাবে অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছেন। পিটিআই নেতা হামাদ আজহার বলেন, রিয়াজের ফিরে আসায় পুরো জাতি আনন্দিত।
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, গ্রেপ্তার হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে তিনি এক্সে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন। সেখানে ৪৭ বছর বয়সী এই সাংবাদিক বলেছিলেন, ‘দেশে কথা বলার জায়গা সংকুচিত হয়ে আসছে এবং আমাকে জোর করে চুপ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘোর সমর্থক।