ইমরান খানসহ তিন নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
 ছবি: এএফপি

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) তিন নেতা ইমরান খান, আসাদ ওমর ও ফাওয়াদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে জামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। গতকাল মঙ্গলবার ইসিপির চার সদস্যের বেঞ্চ এ পরোয়ানা জারি করে। মামলার শুনানি নেন ইসিপি সদস্য নিসার দুররানি। খবর জিও নিউজের।

গত বছরের আগস্টে পিটিআইয়ের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সভা, সংবাদ সম্মেলন ও গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে অপমান করার অভিযোগে অবমাননার নোটিশ পাঠায় ইসিপি। নোটিশে অভিযোগ করা হয়, পিটিআইয়ের নেতারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ইসিপির বিরুদ্ধে অসম্মানজনক, অসংলগ্ন ও অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন।

মঙ্গলবার শুনানির সময় পিটিআইয়ের নেতাদের অব্যাহতির আবেদন প্রত্যাখ্যান করে ইসিপির বেঞ্চ। ১৭ জানুয়ারি শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই দিন পিটিআইয়ের তিন নেতাকে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে পিটিআইয়ের নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, তিনি এই আদেশ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করবেন। এ ছাড়া ইসিপির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করবেন।

ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসিপির দেওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া পরবর্তী শুনানির তারিখ ১৭ জানুয়ারি ধার্য করে এর রায় দেওয়া নিয়মের লঙ্ঘন। এটা ইসিপির দেওয়া পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত।

এ মাসের শুরুতে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে পিটিআইয়ের নেতাদের বিরুদ্ধে অবমাননার শুনানি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ শুনানিতে পিটিআইয়ের নেতাদের পক্ষে আইনজীবী আলী বুখারি বলেন, ফাওয়াদ চৌধুরীর মা অসুস্থ। তিনি মায়ের সঙ্গে লাহোরের হাসপাতালে রয়েছেন। এ ছাড়া ইমরান খানের বর্তমানে কোথাও সফরের অনুমতি নেই। গত বছর লংমার্চের সময় পায়ে গুলি লেগেছিল ইমরানের। ইসিপির পক্ষ থেকে ইমরান খানের মেডিকেল প্রতিবেদন চাওয়া হয়। আইনজীবীর পক্ষ থেকে তা বেঞ্চের সামনে তুলে ধরার কথা বলা হয়েছে।

কমিশনের সদস্যরা বলেন, ইমরান খানকে কারণ দর্শানোর যে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, তিনি তাঁর জবাব দেননি। তাই তাঁকে বেঞ্চের সামনে উপস্থিত হয়ে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন জমা দিতে হবে।

আসাদ ওমরের আইনজীবী আনওয়ার মনসুর বলেন, ‘আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশের বিরুদ্ধে আবেদন করেছি। তিনটি মামলাই একই প্রকৃতির। তাই শুনানি একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে এবং আমি পরবর্তী তারিখে কারণ দর্শানোর জবাব দেব।’

ইসিপি বেঞ্চ জানায়, দলটির নেতাদের হাজিরার জন্য পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনজীবী আলী বুখারি বলেন, পরোয়ানা জারি হলে তাঁদের আবেদন শুনানি হবে না।

আইনজীবী আনওয়ার মনসুর বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বদলে ইসিপি হাজির হওয়ার চূড়ান্ত নোটিশ দিতে পারত। আলী বুখারি বলেন, আগামী শুনানিতে নেতারা অনুপস্থিত থাকলে তখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিতে পারত। ইসিপির সদস্যরা বলেছেন, সে বিষয়েও তাঁরা আদেশ দেবেন।