কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) আবারও নিজেদের নির্বাচনী প্রতীক ‘ব্যাট’ হারিয়েছে। প্রতীক বাতিলে দেশটির নির্বাচন কমিশনের নেওয়া সিদ্ধান্ত পুনর্বহাল করে গতকাল বুধবার রায় দিয়েছেন পেশোয়ার হাইকোর্ট। দলীয় প্রতীক হারানোর বিষয়টি আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে পিটিআইয়ের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাষ্ট্রদ্রোহ, দুর্নীতিসহ একাধিক মামলায় অভিযুক্ত ইমরান খান এখন রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে আছেন। এ কারণে সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে পিটিআই নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করে। নতুন চেয়ারম্যান হন গহর আলী খান। তবে সংবিধান মেনে নির্বাচন হয়নি অভিযোগে ২২ ডিসেম্বর দলটির প্রতীক বাতিল করে কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যায় পিটিআই। গত ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন পেশোয়ার হাইকোর্ট। আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে নির্বাচন কমিশন। গতকাল প্রতীক বাতিলে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই বহাল রেখে রায় দেন পেশোয়ার হাইকোর্টের বিচারপতি এজাজ খান।
এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়েছে পিটিআই। সর্বোচ্চ আদালতে দলীয় প্রতীক ফেরত না পেলে দলটির প্রার্থীদের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়তে হবে।
এ ক্ষেত্রে এমনকি নির্বাচনে বিজয়ী হলেও এসব প্রার্থীর পিটিআইতে যোগদান সম্ভব হবে না। কারণ, কেবল এমন একটি দলে তাঁরা যোগদান করতে পারবেন, যা নির্বাচন কমিশনে সঠিক প্রক্রিয়ায় নিবন্ধিত।
এমন সময় পিটিআইয়ের দলীয় প্রতীক বাতিল করা হলো, যখন জ্যেষ্ঠ নেতাদেরসহ একের পর এক দলটির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হচ্ছে। এমনকি দলটির প্রতিষ্ঠাতা কারাবন্দী ইমরান খানের মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে অবমাননার এক মামলায় ইমরান খান ও তাঁর সরকারের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কমিশনের চার সদস্যের একটি বেঞ্চ এ দুজনকে অভিযুক্ত করেন।
জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আদিয়ালা কারাগারে গতকাল মামলাটির শুনানি হয়। ওই কারাগারে আছেন ইমরান খান ও ফাওয়াদ চৌধুরী। শুনানিতে তাঁরা দুজনই উপস্থিত ছিলেন। আদালত ১৬ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
২০২১ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয় ইমরান খানকে। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়। রাষ্ট্রীয় নথি ফাঁসের মামলায় এখন তিনি কারাগারে আছেন। তোশাখানা মামলায় গত আগস্টে তাঁর তিন বছরের সাজা হয়। যদিও পরে এই সাজা স্থগিত করেন উচ্চ আদালত।