পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লাহোরের একটি আসন থেকে ৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হন ওয়াসিম কাদির। জয়ের পরপরই পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজে (পিএমএল-এন) যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
ওয়াসিম এবারের জাতীয় পরিষদের প্রথম নির্বাচিত সদস্য, যিনি ফলাফল ঘোষণার পরপরই দল ত্যাগ করেন। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের সাবেক এই নেতা বলেন, ‘আমি ওয়াসিম কাদির। লাহোর পিটিআইয়ের মহাসচিব ছিলাম। আমি নিজের ঘরে ফিরে এসেছি।’
পিটিআই ক্ষমতারোহণের পরপরই ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে পিটিআইয়ে যোগ দেন ওয়াসিম। তিনি পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের সাবেক সদস্য (এমপিএ) প্রয়াত চৌধুরী গুলাম কাদিরের ছেলে। নওয়াজের দল পিএমএল-এনেরও টিকিটে লাহোর থেকেও এমপিএ নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
অবশ্য ৬০ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদের জীবনে পিটিআই দ্বিতীয় রাজনৈতিক দল ছিল না। এক দশক আগে পিএমএল-এনে যোগ দেওয়ার আগে বেনজির ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতি ওয়াসিমের আনুগত্য ছিল। ১৯৮৮ ও ২০২২ সালে এই পিপিপির টিকিটে গুলাম কাদির নির্বাচনে লড়েছিলেন।
গুলাম ১১ বছর ধরে তৎকালীন স্বৈরশাসক জিয়াউল হকের সামরিক আইনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। এরপর ১৯৮৮ সালে পিপিপির তৎকালীন চেয়ারপারসন বেনজীর ভুট্টো তাঁকে নির্বাচনে দলের মনোনয়ন দিয়ে পুরস্কৃত করেন। আস্থার প্রতিদান দিয়ে প্রায় ২৫ হাজার ভোট পেয়ে আইজেআই প্রার্থী নিসার আহমেদকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছিলেন গুলাম কাদির।
সে সময় ওয়াসিম সক্রিয়ভাবে বাবার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। এরপর তিনি নরওয়েতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তবে পিপিপির প্রতি ওয়াসিমের আনুগত্য বজায় ছিল। ২০০২ সালে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে তাঁর বাবা গুলাম পিপিপির মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। তবে সেবার তিনি পিএমএল-এনের প্রার্থী সরদার আয়াজ সাদিকের কাছে হেরে যান।
২০০৭ সালের মধ্যে পিএমএল-এন নেতৃত্বের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন ওয়াসিম। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে নওয়াজ শরিফ ও তাঁর ভাই শাহবাজ শরিফ তাঁকে দলীয় টিকিট দেন। ওই আসনে মাখদুম জাবেদ হাশমির সঙ্গে লড়াই হয়েছিল তাঁর। শেষ পর্যন্ত ওয়াসিম সহজেই জয় পেয়েছিলেন।
২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে ওয়াসিমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ২০০৮ সালে জয় পাওয়া তাঁর আসনে প্রার্থী করা হয়েছিল বাউ আক্তারকে।
ওয়াসিম কিছুদিন পাঞ্জাবের খনি ও খনিজ পদার্থ বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালে স্থানীয় নির্বাচনের পর দল থেকে তাঁকে রবি টাউনের ডেপুটি মেয়র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।