পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান খান তাঁর দলের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
গতকাল শুক্রবার লাহোরে জামান পার্কের বাসা থেকে দেওয়া বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান ইমরান খান। বক্তৃতাটি ইউটিউবে প্রচার করা হয়। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি আলোচনার আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ, বর্তমানে যা ঘটছে, তা কোনো সমাধান নয়।’
ইমরান খান আরও বলেন বলেন, অতি মূল্যস্ফীতির কাছাকাছি চলে যাওয়ায় দেশ আসন্ন বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে। তবে ক্ষমতাসীনেরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নন। কারণ, তাঁরা বিদেশে সম্পদ লুকিয়ে রেখেছেন।
ইমরান খান ভিডিও বার্তায় আরও বলেন, সব পক্ষকে আলোচনার জন্য এ আহ্বান তাঁর দুর্বলতা নয়। দেশের সমস্যার সমাধান রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাংবিধানিক ভূমিকার মধ্যে কাজ করে গেলে তবেই সম্ভব হবে। ‘আমি যখনই আলোচনার জন্য আহ্বান জানাই ক্ষমতাসীনেরা ভাবে, আমি দুর্বল হয়ে পড়েছি। তখন তারা পিটিআই নেতাদের ওপর আরও বর্বর আচরণ করে।’
ইমরান খান বলেন, দেশের তরুণদের মধ্যে যে মতাদর্শ তৈরি হয়েছে, কোনো সরকার তা দূর করতে পারবে না। তিনি দেশটির ক্ষমতাধরদের সংযম দেখাতে বলেন। তিনি বলেন, তাঁর দলকে চূর্ণ করার তাদের প্রচেষ্টা দেশকে ধ্বংস করতে পারে। সেনাবাহিনী, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন সবাই পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের পক্ষে কাজ করছে। তারপরও তারা নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছে। তারা চাইছে, তিনি রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে সরে গেলে তারপর নির্বাচন দেবে।
পিটিআই নেতাদের দলত্যাগের ঘোষণাকে জোরপূর্বক ‘বিবাহবিচ্ছেদ’ হিসেবে বর্ণনা করে ইমরান বলেছেন, ৯ মে সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত হওয়ার পর সহিংসতার কথা জানতে পেরে তিনি নিজেই সেনা স্থাপনায় হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
এদিকে গতকাল ফ্রান্স২৪কে একটি সাক্ষাৎকার দেন ইমরান। সেখানে তিনি বলেন, বাড়িতে তাঁকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। হাজারো নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাঁরা পিটিআই সমর্থন করেন, তাঁদের হয় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বা তাঁরা আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি এখনো তাঁর জীবন নিয়ে নিরাপদ বোধ করছেন না। তাঁকে দুবার হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৯ মে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়ায়। এরপর ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পিটিআই নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর পর থেকে পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই দল ছেড়েছেন।