পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির বিশেষ আদালত। আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে করা কূটনৈতিক তারবার্তা (সাইফার) ফাঁসের মামলায় তাঁদের এই কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মাত্র এক সপ্তাহ আগে এই রায় দিলেন আদালত। ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ তাদের প্রতীক ছাড়াই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাঁকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের প্রমাণ হিসেবে একটি তারবার্তা ফাঁস করতে চেয়েছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা বলছে, ওই তারবার্তার মাধ্যমে ইমরান প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, পাকিস্তানের ক্ষমতাধর সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের আগস্টে ইমরান খান ও কুরেশির বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, কূটনৈতিক তারবার্তাটি ইমরান খানের হাতে তুলে দেন সাবেক মুখ্য সচিব আজম খান। পরে তারবার্তাটি কোথায় রেখেছেন, ভুলে গেছেন বলে ইমরান খান তাঁকে জানান এবং বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও সেটা আর ফেরত দেননি।
গত ডিসেম্বরে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেব ইমরানের পাশাপাশি তাঁর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির বিরুদ্ধে বিশেষ আদালতে চলা এই মামলার বিচারকাজের ওপর ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন। আদেশে তিনি বলেছিলেন, মামলাটিতে ‘আইনি ত্রুটি’ রয়েছে।
ইমরান খান বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারে। সেখানেই বিশেষ আদালত বসিয়ে তারবার্তা ফাঁস মামলার কার্যক্রম চলছিল, তবে অভিযোগ গঠন এবং বিচারকাজ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশে সংবাদমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করেন ইমরান। এরপর আদালত এ স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন।
১৩ ডিসেম্বর ইমরান ও কুরেশিকে দ্বিতীয়বারের মতো অভিযুক্ত করা হয়। এরপর অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীন গত মাসে আদিয়ালা কারাগারে নতুন করে মামলার কার্যক্রম শুরু করেন বিশেষ আদালত।
২০২২ সালের এপ্রিলে জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয় ইমরান খানকে। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়। সেনা সদর দপ্তরে হামলাসহ ৯ মের সহিংসতার ঘটনায় আজ নতুন করে তাঁকে কমপক্ষে ১২টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।