বর্তমান স্ত্রী বুশরা মানেকা বিবির সঙ্গে জীবনের শেষনিশ্বাস পর্যন্ত থাকতে চান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গত শনিবার রাতে পাকিস্তানের একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান। সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠার পরই এ মন্তব্য করলেন ইমরান খান।
গালফ নিউজে বলা হয়েছে, তৃতীয় স্ত্রী বুশরা মানেকা বিবি সম্পর্কে ইমরান খান বলেন, ‘বুশরা আমার জন্য আল্লাহর রহমত। আমাদের মধ্যে সমস্যা থাকার প্রশ্নই আসে না। বুশরার সঙ্গে জীবনের শেষনিশ্বাস পর্যন্ত থাকতে চাই।’
গত বছর তৃতীয় বিয়ের সময় ইমরান খান বলেছিলেন, এ বিয়ে ‘তৃতীয় এবং শেষ বিয়ে।’ এরপরই নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ইমরান খান। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বুশরা বিবির সঙ্গে ইমরানের সম্পর্কের অবনতি হয় বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হতে থাকে।
এর আগে এক সাক্ষাৎকারে বুশরা বিবি বলেছিলেন, ‘ইমরান খান খুবই সাধারণ জীবন যাপন করেন। তার মধ্যে কোনো লোভ-লালসা নেই।’ বুশরার মতে, শুধু ইমরান খানই পাকিস্তানে পরিবর্তন আনতে পারেন। তবে পরিবর্তন আসতে সময় লাগবে। কারণ ইমরান খান শুধু পাকিস্তানের নেতা নন, তিনি পুরো মুসলিম বিশ্বের নেতা।
পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান ২০১৮ সালে তৃতীয়বারের মতো তাঁর আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু বুশরা মানেকার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। অনেকে বুশরাকে ডেকে থাকেন ‘বুশরা বিবি’ বা ‘পিংকি পীর’ হিসেবে।
১৯৯৫ সালে ব্রিটিশ নাগরিক জেমিমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করেছিলেন ইমরান খান। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে পাকিস্তানের লাহোরে থাকতেন জেমিমা। কিন্তু ইহুদি পরিবারে জন্ম হওয়ায় পাকিস্তানের মানুষ তাঁকে তেমন পছন্দ করতে পারেননি। ৯ বছর পর ইমরান আর জেমিমার ঘর ভাঙে ২০০৪ সালে। জেমিমার গর্ভে জন্ম নেওয়া দুই ছেলে আছে ইমরান খানের। বিচ্ছেদের পর দুই ছেলে সুলাইমান খান ও কাশিম খানকে নিয়ে যুক্তরাজ্যেই থাকেন জেমিমা গোল্ডস্মিথ।
এরপর ২০১৫ সালে ইমরান বিবাহবন্ধনে জড়িয়েছিলেন বিবিসির টিভি উপস্থাপক, সাংবাদিক রেহাম খানের সঙ্গে। তাঁদের বিয়ে স্থায়ী হয়েছিল ১০ মাস। টিভি উপস্থাপক রেহাম খান একসময় বিবিসিতে আবহাওয়ার খবর পড়তেন। বর্তমানে পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত। ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানের মতো তিন সন্তানের জননী রেহাম খানেরও আগে একবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। এরপর তৃতীয়বারের মতো ইমরান বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন নিজের আধ্যাত্মিক ধর্মগুরুর সঙ্গে।
১৯৯২ সালে পাকিস্তানের ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ছিলেন ইমরান খান। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৬ সালে পিটিআই গঠন করে তিনি রাজনীতি শুরু করেন। দল গঠনের ২২ বছর পর ১১তম সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।