অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে পাকিস্তানের জনগণকে চা পানের পরিমাণ কমাতে বলেছে দেশটির সরকার। খবর বিবিসির।
দেশটির জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, ‘আমি দেশবাসীর প্রতি আবেদন জানাই, তারা যেন চা পানের পরিমাণ এক-দুই কাপ কমিয়ে দেয়। কারণ, আমরা ঋণ করে চা আমদানি করি।’
আহসান ইকবাল মনে করেন, তাঁর দেশের জনগণ দিনে কয়েক কাপ চা কম পান করলে তাতে পাকিস্তানের উচ্চ আমদানি খরচ কমবে।
পাকিস্তান বিশ্বের বৃহত্তম চা আমদানিকারক দেশ। গত বছর দেশটি ৬০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের চা আমদানি করে।
পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত কমছে। এমন প্রেক্ষাপটে দেশটির জনগণকে চা পানের পরিমাণ কমাতে বলল সরকার।
গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। জুনের প্রথম সপ্তাহে তা কমে ১ হাজার কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ আছে, তা দিয়ে দুই মাসের আমদানি ব্যয়ও মেটানো যাবে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়ায় চাপে আছে পাকিস্তান সরকার। রিজার্ভ ধরে রাখতে দেশটির সরকার আমদানি খরচ কমাতে বিশেষভাবে মনোযোগী হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতেও পরামর্শ দিয়েছেন আহসান ইকবাল। তিনি পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের রাত সাড়ে আটটা নাগাদ দোকানপাট বন্ধ করে দিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
বৈদেশিক মুদ্রার খরচ কমাতে সম্প্রতি ৩৮টি পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করে পাকিস্তান। এ তালিকায় অপরিহার্য নয়, এমন বিলাসবহুল পণ্য রয়েছে।
পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে চা পান কমানোর যে আহ্বান জানানো হয়েছে, তা ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
ক্যাফেইন–জাতীয় পানীয় পানের পরিমাণ কমিয়ে পাকিস্তানের গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করা যাবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
গত এপ্রিলে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেন ইমরান খান। ইমরান খানের বিদায়ের পর শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠিত হয়। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা তাঁর সরকারের জন্য বড় পরীক্ষা।
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শাহবাজ শরিফ অভিযোগ করে আসছেন, ইমরান খানের সরকার পাকিস্তানের অর্থনীতিকে খুবই নাজুক অবস্থায় রেখে গেছে। দেশের অর্থনীতিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়াটা তাঁর সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় হবে।