যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ইমরানের মস্কো সফরের পক্ষে বললেন বিলওয়াল

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর দিনে মস্কো সফরে গিয়ে নিজ দেশে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন ইমরান খান। অনেকেই মনে করেন, ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পেছনে এটা অন্যতম একটি কারণ। এখন এ বিষয়ে ইমরান খানের পক্ষ নিলেন পাকিস্তানের নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তিনি বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ইউক্রেনে হামলা শুরুর বিষয়টি না জেনেই মস্কো সফরে গিয়েছিলেন। তাঁর এই সফরের জন্য পাকিস্তানকে শাস্তি দেওয়া ঠিক হবে না। খবর ডনের।

যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন বিলাওয়াল ভুট্টো। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর কাছে ইমরান খানের ২৪ ফেব্রুয়ারি মস্কো সফর বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকেরা। জবাবে বিলওয়াল ভুট্টো বলেন, পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মস্কোয় গিয়েছিলেন। তিনি জানতেন না সেদিনই বর্তমান সংঘাতের (ইউক্রেন যুদ্ধ) সূচনা হবে। এটা তাঁর (ইমরান খানের) জানার সুযোগও ছিল না। তিনি মনে করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এমন কাজের জন্য পাকিস্তানকে শাস্তি দেওয়া মোটেও উচিত নয়।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মস্কো সফরে যান ইমরান খান। ওই দিনই ইউক্রেনে হামলা শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেদিন শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও চলছে। এর মধ্যে দেশের পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন ইমরান খান। বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর দিনে মিত্র হিসেবে পুতিনের পাশে ছিলেন ইমরান। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পর পাকিস্তানে পিএমএল–এন নেতা শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে নতুন জোট সরকার গঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, পাকিস্তানের অবস্থান সুস্পস্ট। তাঁর দেশ জাতিসংঘের নীতি মেনে ইউক্রেন ইস্যুতে যেকোনো ধরনের শক্তি প্রয়োগের বিপক্ষে। বিলওয়াল ভুট্টো বলেন, ‘আমরা কোনো সংঘাতের অংশ নই। অংশ হতেও চাই না। পাকিস্তান দ্রুত সংঘাত কমিয়ে এনে শান্তি স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার পক্ষে। এজন্য কূটনৈতিক আলোচনার এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে।’

এর আগে বিলাওয়াল ভুট্টো জানান, পাকিস্তানের নতুন সরকার অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক সম্মেলনেও তিনি একই বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, একদিকে ভূরাজনৈতিক সংকট, অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তন, করোনা মহামারি ও দারিদ্র্য– এসব কারণে পাকিস্তানের মতো দেশগুলো শুধু খাদ্য সংকটে নয়, পানি ও জ্বালানি নিয়েও অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকে বিলওয়াল ভুট্টো দুই দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি অর্থনীতি, বিনিয়োগ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে একযোগে কাজ করার আগ্রহ ব্লিঙ্কেনকে জানিয়েছেন।