হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য গণতান্ত্রিক পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ। শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর গতকাল সোমবার তিনি এ মন্তব্য করেন। খবর জিয়ো নিউজের।
নানা নাটকীয়তার পর জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটে ৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান। এ অনাস্থা ভোটের পেছনে একটি বিদেশি রাষ্ট্রের (যুক্তরাষ্ট্র) ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করে আসছেন তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে সাকি বলেন, ‘সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের শান্তিপূর্ণ পুনর্বহাল আমরা সমর্থন করি। আমরা একটি রাজনৈতিক দলের ওপর আরেকটি দলকে সমর্থন করি না।’ তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ করে আইনের শাসনের মূল্যবোধ ও আইনে ন্যায়বিচার পাওয়ার সমতাকে সমর্থন করে।
সাকি আরও বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদের সহযোগিতাকে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখে। ক্ষমতায় যে-ই থাকুক না কেন, এ অবস্থান অপরিবর্তিত থাকে।
শাহবাজকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফোন করবেন কি না, এমন প্রশ্নে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ‘ভবিষ্যতে ফোন করবেন কি না, সে বিষয়ে এ অবস্থায় ও এ সময়ে আমার আগাম বলার মতো কিছু নেই। অবশ্যই, বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের সঙ্গে আমরা ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখেছি।’
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসার পর ইমরান খানের সঙ্গে কখনো টেলিফোনে কথা বলেননি। ক্ষমতা গ্রহণের পর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে ৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান খান। সরকার পতনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ ইমরান ও তাঁর দলের। গত ৮ মার্চ বিরোধীরা পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর থেকেই এ অভিযোগ করে আসছেন ইমরান।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সুর না মেলানোয় ইমরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ক্ষুব্ধ, এমনটা বলা হচ্ছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। ওই দিনই মস্কো সফরে যান ইমরান খান। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন তিনি। কূটনৈতিক মাধ্যমে ইমরানকে ওই সফর থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে ইমরান খানের বিষয়ে তাঁর সরকারের নেতিবাচক মনোভাবের কথা জানিয়েছিলেন বলে এক কূটনৈতিক তারবার্তার বরাত দিয়ে অভিযোগ করেন ইমরান।
পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘হুমকি দেওয়ার’ ওই তারবার্তা গত ২৭ মার্চ এক সমাবেশে দেখান তিনি। তাঁর দাবি, জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পেছনে ওই হুমকির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।