ভারতের জন্য আকাশসীমা ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে গিয়ে পাকিস্তানের ৫ কোটি ডলারেরও বেশি লোকসান হয়েছে। পাকিস্তানের বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী গুলাম সারওয়ার খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ভারতের উড়োজাহাজগুলোর জন্য ৯টি রুট ব্যবহার নিষিদ্ধ করে পাকিস্তান। যে দুটি খোলা ছিল, সেগুলো শুধু দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে যেতে পারত। প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গত মঙ্গলবার এই নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি উঠিয়ে নেয় পাকিস্তান।
পাকিস্তানের মন্ত্রী গুলাম সারওয়ার খান বলেন, আকাশসীমা বন্ধের কারণে তাঁর দেশের পাঁচ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ওই নিষেধাজ্ঞার সময় শতাধিক বাণিজ্যিক ও কার্গো ফ্লাইটের যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটেছিল। এ সব ফ্লাইট থেকে পাকিস্তান এ পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারত।
অবশ্য গুলাম সারওয়ার খানের দাবি, এই নিষেধাজ্ঞায় ভারতের ক্ষতি আরও বেশি হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যায়নি। কিন্তু তা পাকিস্তানের চেয়ে বেশিই হবে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আধা সামরিক বাহিনীর ওপর আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ওই হামলায় ভারতের আধা সামরিক বাহিনীর ৪০ জনের বেশি সদস্য নিহত হন। জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহম্মদকে এ হামলার জন্য দায়ী করে ভারত। এর প্রতিশোধ হিসেবে ২৫ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের নিয়ন্ত্রণরেখার বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। এতে শতাধিক জঙ্গি নিহত হওয়ার দাবি করে দেশটি। তবে পাকিস্তানের দাবি, কিছু গাছপালা নষ্ট হওয়া ছাড়া সেখানে প্রাণহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি। পাশাপাশি গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে নিজেদের অধিকাংশ আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান।
ওই ঘটনার প্রায় পাঁচ মাস পর গত মঙ্গলবার পাকিস্তান নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। এর আগে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না পেরে তাদের রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইনসের ২ জুলাই পর্যন্ত ৪৯১ কোটি রুপি লোকসান হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি এয়ারলাইনস কোম্পানিরও লোকসান হয়েছে।