পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের মদদ দেওয়ার দীর্ঘ অভিযোগ রয়েছে। এমন অভিযোগের মধ্যে এবার স্বয়ং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ অভিযানে নিহত আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে ‘শহীদ’ হিসেবে আখ্যা দিলেন। গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পার্লামেন্ট জাতীয় পরিষদে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই আখ্যা দেন। তাঁর এই বক্তব্যের প্রতিবাদে পাকিস্তানজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
জাতীয় পরিষদে ইমরান খান বলেন, ‘আমেরিকানরা অ্যাবোটাবাদে এলেন এবং ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করলেন। তাঁকে শহীদ হতে হলো। এই ঘটনায় পাকিস্তানিরা বিব্রত হয়েছিলেন, যা আমি কখনো ভুলব না।’
২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরে সেনাবাহিনীর সুরক্ষিত একটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আল-কায়দার নেতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে। এ সময় লাদেনের কয়েকজন সহযোগীও মারা যান। ওয়াশিংটন সব সময় অভিযোগ করে আসছে, পাকিস্তান সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের লালন করে। ইসলামাবাদও সব সময় তা অস্বীকার করে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ইমরান খান বলেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন দিয়েছি এবং এর বদলে শুধু অপমানই সয়েছি। আফগানিস্তানে সব ব্যর্থতার জন্য তারা আমাদের ওপরই দোষ চাপিয়েছে। তারা আফগানিস্তানে সফল হতে পারেনি। সে কারণে আমাদের ওপর খোলাখুলিভাবে দোষ চাপিয়েছে।’
লাদেনকে শহীদ আখ্যা দেওয়ায় ইমরান খানের কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধী নেতা খাজা মোহাম্মদ আসিফ। তিনি বলেন, ‘তিনি (বিন লাদেন) আমাদের দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। কিন্তু তাকে তিনি (ইমরান) শহীদ বলে ডাকছেন।’
পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি টুইট করেন, লাদেনকে প্রধানমন্ত্রী শহীদ হিসেবে উল্লেখ করায় পাকিস্তানের ‘সহিংস সন্ত্রাসবাদকে তোষণের ইতিহাসকেই তুলে ধরেছে’। ইমরানকে ‘তালেবান খান’ বলে কটাক্ষ করে সিনেটর মুস্তাফা নওয়াজ বলেন, ‘লাদেন শহীদ হলে আল-কায়েদার হামলায় আমাদের সেনাবাহিনীর যাঁরা প্রাণ হারান, তাঁদের কী বলা হবে?’
ইমরানের বক্তব্যের বিষয়ে তাঁর কার্যালয় থেকে কোনো বিবৃতিতে দেওয়া হয়নি। তবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, মুখ ফসকে এটা বলে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী।